বিদেশে গেছেন দেড় লাখ

Spread the love

বাড়ছে অভিবাসী নারীকর্মীর সংখ্যা

শরিফুল হাসান

বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পুরুষ জনশক্তির রপ্তানি কমলেও বেড়েছে অভিবাসী নারীকর্মীর সংখ্যা। সরকারি হিসাব অনুযায়ী, গত জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে মোট চার হাজার ৮৬৫ জন নারীকর্মী বিভিন্ন দেশে গেছেন। গত বছরের প্রথম দুই মাসে এই সংখ্যা ছিল তিন হাজার ৫৭০ জন। আর গত ২০ বছরে বিদেশে গেছেন দেড় লাখ নারীকর্মী।প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয় বলছে, পুরুষের পাশাপাশি নারীকর্মীরা বৈদেশিক মুদ্র্রা পাঠিয়ে অবদান রাখছেন জাতীয় অর্থনীতিতে। তবে নারী অভিবাসন সংগঠনগুলো বলেছে, লেবাননসহ বিভিন্ন দেশে কাজ করতে গিয়ে নারীশ্রমিকদের অনেকেই নির্যাতন, নিপীড়ন ও হয়রানির মুখে পড়ছেন। তাঁদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সংগঠনগুলো সরকারকে আরও সক্রিয় হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।বৈদেশিক কর্মসংস্থান ও প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয় এবং জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) তথ্য অনুযায়ী, ১৯৯১ থেকে ২০১১ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মোট এক লাখ ৫৩ হাজার ৯৭৬ জন নারীকর্মী বিদেশে গেছেন। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি গেছেন সংযুক্ত আরব আমিরাতে। এই সংখ্যা ৪৩ হাজার ২৫২ জন। এ ছাড়াও লেবাননে ৪১ হাজার ৫৬২, সৌদি আরবে ৩১ হাজার ২৮৪, জর্ডানে আট হাজার ১৬৯, কুয়েতে সাত হাজার ৬৫৮, মরিশাসে সাত হাজার ৩৭২, মালয়েশিয়ায় ছয় হাজার ৪৩৭, ওমানে দুই হাজার ৭৪৩ এবং বাহরাইনে তিন হাজার ৪৬৩ জন নারীকর্মী গেছেন।সরকারি জনশক্তি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান বোয়েসেলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আবদুল্লাহ প্রথম আলোকে বলেন, বোয়েসেলের মাধ্যমে নারীকর্মীদের মাত্র ১০ হাজার টাকায় জর্ডানে পাঠানো হচ্ছে।বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বাংলাদেশ দূতাবাসে ১৪ জন শ্রম কর্মকর্তা আছেন। এঁদের মধ্যে মাত্র একজন নারী। নাসরিন জাহান নামের ওই কর্মকর্তা দুবাইয়ে বাংলাদেশ দূতাবাসে প্রথম সচিব (শ্রম) হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। নাসরিন জাহান প্রথম আলোকে বলেছেন, নারীদের যদি একটু দক্ষ ও প্রশিক্ষিত করা যায়, তাহলে তাঁরা আরও বেশি বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করতে সক্ষম হবেন।বৈদেশিক কর্মসংস্থান ও প্রবাসীকল্যাণমন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, নারীশ্রমিকেরা যাতে বিদেশে গিয়ে বিপদে না পড়েন, সে ব্যাপারে সরকার সজাগ রয়েছে।বাংলাদেশ মহিলা অভিবাসী শ্রমিক সংস্থার পরিচালক সুমাইয়া ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, অন্য দেশগুলোতে মোটামুটি ভালো অবস্থা থাকলেও লেবাননে কর্মরত নারীরা নির্যাতিত হচ্ছেন। বিষয়টি আরও ভালোভাবে নজরদারি করা দরকার।নারীকর্মীদের বিদেশে চাকরিসংক্রান্ত যাবতীয় বিষয়ে তথ্য দেওয়ার জন্য বিএমইটি ও ইউনিসেফের যৌথ উদ্যোগে বিএমইটি ভবনে ‘নারী অভিবাসী তথ্যকেন্দ্র’ স্থাপন করা হয়েছে। এই কেন্দ্রের কর্মকর্তা মাহমুদা আক্তার বলেন, রিক্রুটিং এজেন্সির খোঁজ, ভিসা পরীক্ষা এবং অন্য যেকোনো তথ্যের জন্য নারীকর্মীরা এখানে যোগাযোগ করতে পারেন।বিএমইটির মহাপরিচালক খোরশেদ আলম চৌধুরী দাবি করেন, বিএমইটি তথ্যকেন্দ্র চালুর পর বিদেশে বাংলাদেশি নারীশ্রমিকদের ওপর নির্যাতনের ঘটনা অনেক কমে এসেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.