সাক্ষাৎকার

Spread the love

জলবায়ু পরিবর্তন ভবিষ্যৎ নয়, বর্তমান বিপদ

শরিফুল হাসান

হাছান মাহমুদ প্রতিমন্ত্রীবন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয় প্রথম আলো: কোপেনহেগেন সম্মেলন নিয়ে বাংলাদেশের প্রত্যাশা কী? হাছান মাহমুদ: অনেকেই মনে করছেন, এই সম্মেলনে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলো টাকা চাইবে। কে কত টাকা পাবে, সেটি ঠিক হবে। আসলে তা নয়। কোনো দাবি-দাওয়া নিয়ে তহবিল বা ফান্ড চাওয়ার প্রশ্নে কোপেনহেগেন সম্মেলন হচ্ছে না। কোপেনহেগেনের এই সম্মেলন নিয়ে সারা বিশ্বেই এখন অনেক প্রত্যাশা। কিন্তু গত নভেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে বার্সেলোনায় বৈঠকের পর একটি বিষয় পরিষ্কার, যতটা আশা করা হয়েছিল ততটা সফল না-ও হতে পারে এ সম্মেলন। বিষয়টি এখন সবাই বুঝছে। এমন একটি বড় সম্মেলনে আসলে কী কী সিদ্ধান্ত হবে, সেটি আগেই ঠিক হয়ে যায়। বার্সেলোনোয় সেই বৈঠকে অনেক বিষয়ে মতৈক্য হয়নি। এ কারণে কোপেনহেগেনের সফলতায় অনেকটাই ভাটা পড়তে পারে। তবে অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে এখন দেশগুলোর মধ্যে পারস্পরিক সমঝোতা অনেক বেশি। কাজেই আমরা আশা করছি, মতৈক্য হবে এবং তার একটি আইনি কাঠামো থাকবে।প্রথম আলো: সম্মেলনের উদ্দেশ্যগুলো তাহলে কী কী?হাছান মাহমুদ: ২০১২ সালে কিয়োটো প্রটোকলের মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে। পরিবেশ রক্ষায় ও বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় এরপর কী কর্মসূচি নেওয়া হবে, সেটি নির্ধারণ করতেই এ সম্মেলন। কত দিনের মধ্যে, কী পরিমাণ কার্বন নিঃসরণ কমিয়ে আনা হবে, ২০২০ সালের মধ্যে ১৯৯০ সালের তুলনায় কার্বণ নিঃসরণ কতটুক কমিয়ে আনা হবে, কার্বন নিঃসরণ সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে কমিয়ে আনার জন্য শিল্পোন্নত দেশগুলো কী উদ্যোগ নেবে, জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতি মোকাবিলায় কত দিন পর্যন্ত কোন দেশকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে, কোথা থেকে অভিযোজন তহবিলের এই টাকা আসবে, ২০১২ সালের পর কোন দেশকে কত টাকা দেওয়া হবে; এত সব বিষয় নির্ধারণ করতেই এই সম্মেলন। কিয়োটো প্রটোকল সবাই মানেনি। তাই আমরা চাই, কোপেনহেগেনে যেসব সিদ্ধান্ত হবে সেটি যেন সবাই মেনে নেয়। কে কতটা কার্বন নিঃসরণ কমাতে চাইছে, তারা আসলেই কমাচ্ছে কি না, সেটি পর্যবেক্ষণ করতে হবে। এ জন্য একটি আইনি কাঠামা যেন থাকে।প্রশ্ন: সম্মেলনে বাংলাদেশের অবস্থান কী?হাছান মাহমুদ: কোপেনহেগেন সম্মেলনে উন্নয়নশীল দেশগুলোর অর্থাত্ এলডিসির একটি গ্রুপ এবং জি-৭৭ ও চীন এই দুটি পক্ষ থাকবে। এরা জাতিসংঘ কর্তৃক স্বীকৃত গ্রুপ। এ ছাড়া মোস্ট ভালনারেবল কান্ট্রিস (এমভিসিস) এবং অ্যালায়েন্স অব স্মল স্টেটস অ্যান্ড আইসল্যান্ড স্টেটস (অ্যাওসিস) নামে দুটি পক্ষ থাকবে। এই দুটি পক্ষ আবার জাতিসংঘের স্বীকৃত নয়। আমরা চাই, সবগুলো পক্ষ মিলে যেন একটি ঐকমত্যে পৌঁছানো যায়। কিয়োটো প্রটোকলে যুক্তরাষ্ট্র স্বাক্ষর করেনি। আমরা আশা করি, এবার যুক্তরাষ্ট্র নতুন প্রটোকলে স্বাক্ষর করবে। তবে এগুলো সবই প্রত্যাশা।একটি বিষয় মনে রাখতে হবে, আমরা জলবায়ু পরির্বতন বা অতিরিক্ত কার্বন নিঃসরণের জন্য দায়ী নই। কাজেই যারা দায়ী, তাদের দায়িত্ব হচ্ছে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোকে সাহায্য করা। তাদের দায়িত্ব বিশ্ব উষ্ণায়ন কমানো। ক্ষতিগ্রস্তদের তহবিল জোগানো।প্রথম আলো: সম্মেলনে বাংলাদেশ কী চাইবে?হাছান মাহমুদ: এই সম্মেলনে কেবল বাংলাদেশের চাওয়া-পাওয়া জড়িত নয়। এই সম্মেলন আসলে বৈশ্বিক মতৈক্যের বিষয়। বৈশ্বিক সমাধান ভালো হলে বাংলাদেশেরও ভালো হবে। সম্মেলনে আমরা দাবি করব, আমাদের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। ঋণ নয়, সরাসরি অনুদান দিতে হবে। অভিযোজন তহবিলের জন্য আমাদের আর্থিক ও কারিগরি দুই ধরনের সহায়তাই দিতে হবে। আমরা চাই, অভিযোজন তহবিল দেওয়ার ক্ষেত্রে সবগুলো দেশকে যেন এক করে দেখা না হয়। এ ক্ষেত্রে কারা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত, সেগুলো অবশ্যই বিবেচনায় আনতে হবে। প্রথম আলো: বাংলাদেশ যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত, সেটি কীভাবে প্রমাণিত হবে?হাছান মাহমুদ: কোন দেশ সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত, সেটি নির্ধারণের চারটি মানদণ্ড আছে। এগুলো হলো—জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে কারা সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত, কোথায় প্রাকৃতিক দুর্যোগ বেশি হচ্ছে, সবচেয়ে বেশি জনসংখ্যা কোথায় ক্ষতিগ্রস্ত এবং ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলো ক্ষতি মোকাবিলায় বা অভিযোজনের জন্য এরই মধ্যে কী কী পদক্ষেপ নিয়েছে। যেকোনো দেশের ক্ষতিই এই চারটি মানদণ্ডে মাপতে হবে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশের ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার একটি রূপ হলো সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়া এবং অনেক এলাকা পানিতে ডুবে যাওয়া। লবণাক্ততাও বেড়ে যাবে। অনেক এলাকা ৫০ শতাংশ লবণাক্ত হয়ে যাবে। এসব সমস্যাতেই বাংলাদেশ ভুগছে। মালদ্বীপের ডুবে যাওয়ার আশঙ্কা থাকলেও লবণাক্ততার সমস্যা নেই। এ ছাড়া হিমালয় পর্বতমালায় যে বরফ গলছে, তাতে বন্যা বাড়বে। নদীর গতিপথ বদলে যাবে। এগুলো মালদ্বীপ, টুভ্যালু, টোবাগো কারও ক্ষেত্রেই নেই। কিন্তু বাংলাদেশ সব ধাপেই ক্ষতিগ্রস্ত হবে।দ্বিতীয় আরেকটি বিষয় হলো দুর্যোগ। বাংলাদেশে গত কয়েক বছরে সিডর, আইলাসহ দুর্যোগের মাত্রা অনেক বেশি। তৃতীয় বিষয়টি হলো জনসংখ্যা। বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যা ১৫ কোটি। কাজেই এখানে সবচেয়ে বেশি লোক ক্ষতিগ্রস্ত হবে। অথচ মালদ্বীপের মোট লোকসংখ্যাও বাংলাদেশের অনেক জেলার চেয়ে কম।চতুর্থ বিষয়টি হলো, জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতি মোকাবিলায় ও অভিযোজনের জন্য কারা কী উদ্যোগ নিয়েছে। সে ক্ষেত্রেও বাংলাদেশ এগিয়ে। এরই মধ্যে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনাসহ অনেক উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কাজেই চারটি মানদণ্ড হিসাব করলে বাংলাদেশই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিপূরণ পাওয়ার দাবিদার।প্রথম আলো: ক্ষতি ও অভিযোজনসহ সার্বিক বিষয়ে প্রস্তুতি নিতে বাংলাদেশ কীভাবে কাজ করেছে?হাছান মাহমুদ: একটি বিষয় না বললেই নয়, অতীতে যাঁরা এখানে কাজ করেছেন, তাঁদের জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে অনুসন্ধানী দৃষ্টি ছিল না। তাঁদের কোনো প্রস্তুতি ছিল না। আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর দেশের সেরা সব বিশেষজ্ঞকে নিয়ে কাজ করেছি। এ ক্ষেত্রে কে কোন দলের, কে কোন রাজনীতি করছেন, সেসব মাথায় রাখা হয়নি। দীর্ঘদিন ধরে এখানে বিশেষজ্ঞরা কাজ করছেন। তাঁরা যেভাবে বলছেন, আমরা সেভাবেই কাজ করছি। অনেকগুলো কমিটি আছে। সব কটিতেই বিশেষজ্ঞরা আছেন। সংসদীয় কমিটিও একসঙ্গে কাজ করছে। জাতীয়ভাবে ক্লাইমেট চেঞ্জ স্ট্র্যাটেজি এবং অ্যাকশন প্ল্যানও করা হয়েছে।প্রশ্ন: বাংলাদেশ কী ধরনের ক্ষতিপূরণ চাইবে?হাছান মাহমুদ: সম্মেলনে ৭০ হাজার কোটি টাকা চাইবে বাংলাদেশ। ক্ষতিপূরণের হিসাব করলে এটি খুব বেশি নয়। কারণ, উন্নয়নশীল দেশগুলোর জিডিপির দেড় শতাংশ ধরলে ১৪৫ বিলিয়ন ডলার পাওয়া যাবে। এর মধ্যে জনসংখ্যার অনুপাত ধরলে বাংলাদেশ পাঁচ বিলিয়ন ডলার পায়। কাজেই ৭০ হাজার কোটি টাকা খুব বেশি নয়। এর বাইরে আমরা প্রযুক্তিগত সহায়তাও চাইব। কারণ, অভিযোজনের কাজে আধুনিক প্রযুক্তি লাগবে।প্রথম আলো: ক্ষতিপূরণের টাকা কীভাবে খরচ হবে?হাছান মাহমুদ: আমাদের ১১ হাজার কিলোমিটার বেড়িবাঁধ আছে। বন্যাসহ দুর্যোগ মোকাবিলায় এই বাঁধ যথেষ্ট নয়। এগুলো তৈরি হয়েছে ষাটের দশকে। কাজেই এগুলোর সংস্কার করতে হবে, উঁচু করতে হবে। ভবিষ্যতের জন্য নতুন করে বাঁধ বানাতে হবে। এ জন্য বড় অঙ্কের অর্থ লাগবে। আমাদের যে আশ্রয়কেন্দ্র আছে তার সংখ্যা বাড়াতে হবে। এখন যেসব আশ্রয়কেন্দ্র আছে, তাতে শুধু মানুষ থাকতে পারে। গবাদিপশুর জন্য কোনো ব্যবস্থা নেই। নতুন আশ্রয়কেন্দ্রে সেসব করতে হবে। বাংলাদেশের সতর্কসংকেত-প্রক্রিয়া আরও আধুনিক করতে হবে। স্থানীয় সরকারকে শক্তিশালী করতে হবে। এ ছাড়া আমাদের নদীগুলোর খনন করতেই ২৫ থেকে ৩০ হাজার কোটি লাগবে। স্বল্পকালীন ও দীর্ঘমেয়াদি প্রকল্পের জন্য এসব টাকা চাওয়া হবে।প্রথম আলো: টাকা খরচ করার ক্ষেত্রে ব্যবস্থাপনা কী হবে?হাছান মাহমুদ: অনেকেই চাইছে, এই টাকার ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে বিশ্বব্যাংক থাকুক। কিন্তু আমরা সরাসরি সেই টাকা চাই। তবে সমঝোতার স্বার্থে স্বল্প সময়ের জন্য এই টাকা তাদের কাছে থাকতে পারে। তবে আমরা চাই, জাতিসংঘই এখানে নেতৃত্ব দিক। অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে টাকা দিতে যেন দীর্ঘসূত্রতা না হয়। আর এই টাকা কীভাবে খরচ হবে, তার জন্য ক্লাইমেট চেঞ্জ ট্রাস্ট ফান্ড করা হয়েছে। এতে সরকারি-বেসরকারিসহ সুশীল সমাজের সবাই আছেন। কয়েকটি কমিটি আছে। এখানে রাজনীতির ঊর্ধ্বে দেশের সব লোক আছে।প্রথম আলো: ক্ষতিপূরণের টাকার জোগান নিয়ে কোনো আলোচনা হবে কি?হাছান মাহমুদ: কোপেনহেগেনে এই বিষয় নিয়ে কথা হবে না। এখানে কত সালের মধ্যে বিশ্ব কার্বন নিঃসরণ কমাবে, কী পরিমাণ কার্বন নিঃসরণ কমাবে, কে কতটুকু কমাবে এবং এ জন্য কার কী দায়িত্ব, সেসব নিয়ে আলোচনা হবে। তবে অভিযোজন তহবিলের অর্থ কীভাবে আসবে, সেটি নিয়ে আলোচনা হবে। তবে এই টাকা কোত্থেকে আসবে সেটি ভাবার দায়িত্ব আমাদের নয়। কারণ, আমরা কারও ক্ষতি করিনি। আমরা ক্ষতিগ্রস্ত দেশ। আমাদের বক্তব্য, শিল্পোন্নত দেশগুলোকে তাদের জিডিপির ১ দশমিক ৫ শতাংশ অভিযোজন তহবিলের জন্য দিতে হবে। সেই হিসাবে বছরে ৪৫০ থেকে ৬০০ বিলিয়ন ডলার আসবে। বাংলাদেশের সুনির্দিষ্ট দাবি, সবাই সমান ক্ষতিগ্রস্ত নয়। কাজেই বাংলাদেশের মতো দেশগুলোর বিষয়টি সবার আগে চিন্তা করতে হবে। প্রথম আলো: জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে অনেক রোগ বাড়ছে। অনেকেই উদ্বাস্তু হচ্ছে। এসব সমস্যা সমাধানে কোনো পরিকল্পনা বাংলাদেশের আছে কি?হাছান মাহমুদ: অবশ্যই আছে। বাংলাদেশে ৪৪টি পরিকল্পনা বা অ্যাকশন প্ল্যান আছে। এখানে মাইগ্রেশন, স্বাস্থ্যসহ সব ধরনের ক্ষতি মোকাবিলায় পরিকল্পনার কথা আছে।প্রথম আলো: সম্মেলনে বাংলাদেশ কি বিশেষ কিছু চাইবে?হাছান মাহমুদ: হ্যাঁ। আমরা চাই, বাংলাদেশে একটি আন্তর্জাতিক অভিযোজন কেন্দ্র গঠন করা হোক। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও এ ক্ষেত্রে জোর দেবেন। কারণ, বাংলাদেশ দুর্যোগ ব্যবস্থাপনাসহ জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতি মোকাবিলায় এরই মধ্যে অনেক পদক্ষেপ নিয়েছে। কাজেই বাংলাদেশেই কেন্দ্রটি হওয়া উচিত। এটি বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় হতে পারে। বাংলাদেশে এই কেন্দ্র হলে সারা বিশ্বই উপকৃত হবে। এটি বাংলাদেশের জন্য এক ধরনের স্বীকৃতি। প্রথম আলো: সম্মেলনে বাংলাদেশের পক্ষে কারা কারা থাকবে? বাংলাদেশের কি আলাদা করে কোনো জলবায়ু কূটনীতি থাকবে?হাছান মাহমুদ: জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে আজ বিশ্বে যখনই ক্ষতির কথা আসে, তখনই বাংলাদেশ ও মালদ্বীপের নাম আসে। আমরা আমাদের কূটনৈতিক যোগাযোগ এবং সরকারি-বেসরকারি সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে সারা বিশ্বকে বোঝাতে সক্ষম হয়েছি, বাংলাদেশই জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশ। সারা বিশ্বই এখন সেটি স্বীকার করে। এ কারণেই জাতিসংঘের মহাসচিব তাঁর বক্তৃতায় জলবায়ু পরিবর্তনের কথা এলে বাংলাদেশের নাম বলেন। ইউরোপীয় কমিশনের চেয়ারম্যান বাংলাদেশের নাম বলেন। সম্প্রতি আমরা মালদ্বীপে গিয়েছিলাম। সেখানে বেশির ভাগ ক্ষুদ্র ও ক্ষতিগ্রস্ত দেশের বৈঠক হয়েছে। এই ২০ থেকে ২৫টি দেশ একসঙ্গে থাকবে। এর মধ্যে জনসংখ্যার ভিত্তিতে সবচেয়ে বড় দেশ বাংলাদেশ। এ ছাড়া কোপেনহেগেন সম্মেলনে যে পরিমাণ কার্বন নিঃসরণ হবে, তার সমপরিমাণ ক্ষতিপূরণ বাংলাদেশ পাবে। এটিও একটি বড় কূটনৈতিক সফলতা ও স্বীকৃতি।প্রথম আলো: সম্মেলনে বিশ্বের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য বাংলাদেশ কী করবে?হাছান মাহমুদ: সম্মেলনে বাংলাদেশ প্রতিটি দেশকে এক গুচ্ছ প্রকাশনা (ফোল্ডার) দেবে। এতে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে কীভাবে বাংলাদেশ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, সেটি বিশদভাবে বলা হবে। সম্মেলনে বাংলাদেশ একটি স্লোগানও ঠিক করেছে। সেটি হলো, ‘জলবায়ু-দুর্গত বাংলাদেশের পাশে দাঁড়ান (স্ট্যান্ড বিসাইড বাংলাদেশ—ভিকটিম অব ক্লাইমেট চেঞ্জ)। এ ছাড়া সম্মেলনে আমরা হাজার দশেক স্টিকার নিয়ে যাব। সেগুলো সব গাড়িতে লাগানো হবে। আমরা অনেক ফেস্টুন নিয়ে যাব। প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের অবস্থান তুলে ধরে বক্তব্য দেবেন। এ ছাড়া বিভিন্ন পার্শ্ব-অনুষ্ঠানও থাকবে। এখানে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশ কীভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, সেই অভিজ্ঞতা বিনিময় করা হবে। কারণ জলবায়ু পরিবর্তন অনেক জায়গায় এখনো ভবিষ্যত্, কিন্তু বাংলাদেশে এটি বাস্তবতা।

Leave a Reply

Your email address will not be published.