সরকারিভাবে মালয়েশিয়ায় জনশক্তি রপ্তানি

Spread the love

আগামী সপ্তাহ থেকে কর্মী যাবেন বাড়ছে না খরচ

শরিফুল হাসান

সরকারিভাবে মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানোর জন্য সবকিছু চূড়ান্ত করেছে সরকার। স্বাস্থ্য পরীক্ষা, প্রশিক্ষণ—সব সম্পন্ন করে ইতিমধ্যেই সাড়ে সাত হাজার কর্মীর তালিকা পাঠানো হয়েছে কুয়ালালামপুরে। আজ শুক্রবার থেকে ওই কর্মীদের ভিসার জন্য নামের তালিকা পাঠাবে মালয়েশিয়া। এরপর আগামী সপ্তাহ থেকেই কর্মী যাওয়া শুরু করবেন দেশটিতে। এদিকে নিয়োগকর্তাই লেভি (কর) দিয়ে দেওয়ায় খরচ ৪০ হাজার টাকাই থাকছে। মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠাতে জানুয়ারি মাসেই সারা দেশে নাম নিবন্ধন করা হয়। প্রথম দফায় ১১ হাজার ৭৫৮ জন প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত হন। জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) সূত্রে জানা গেছে, ফেব্রুয়ারিতে তাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও ১০ দিনের প্রশিক্ষণ সম্পন্ন হয়। এরপর ৪ মার্চ থেকে যোগ্যদের চূড়ান্ত তালিকা পাঠানো শুরু হয় কুয়ালালামপুরে। ১৬ মার্চ পর্যন্ত ছয় হাজার ৫৬১ জন কর্মীর তালিকা পাঠানো হয়। বিএমইটির মহাপরিচালক বেগম শামছুন্নাহার গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, ‘সব কাজ শেষ করে আমরা চূড়ান্ত তালিকা কুয়ালালামপুরে পাঠিয়ে দিয়েছি। সেখান থেকে সবকিছু যাচাই-বাছাইয়ের পর শুক্রবার থেকে ধারাবাহিকভাবে কর্মীদের ভিসার জন্য নামের তালিকা (ভিসা উইথ রেফারেন্স—ভিডব্লিউআর) পাঠানো হবে। এর পরই আমরা ঢাকার মালয়েশিয়া দূতাবাসে কর্মীদের ভিসার জন্য পাসপোর্ট জমা দিতে বলব। আমরা আশা করছি, ২৭ মার্চ থেকেই কর্মী যাওয়া শুরু হবে মালয়েশিয়ায়। এ ছাড়া নিয়োগকর্তাই লেভি দিয়ে দেওয়ায় কর্মীরা ৪০ হাজার টাকাতেই মালয়েশিয়া যেতে পারবেন। তবে পরে কর্মীদের বেতন থেকে এই টাকা কেটে নেওয়া হবে।’বিএমইটি সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার থেকে প্রতিদিনই কর্মীদের নামের তালিকা আসতে শুরু করবে। সেটি আসার পরপরই কর্মীদের মুঠোফোনে বার্তা দিয়ে তাঁদের পাসপোর্ট, সাড়ে ৩৫ হাজার টাকা ও পাঁচ কপি ছবি নিয়ে ঢাকায় চলে আসার বার্তা দেওয়া হবে। এরপর তাঁদের ভিসা ফরম পূরণ করে ঢাকার মালয়েশিয়া দূতাবাসে দেওয়া হবে। এর আগেই টিকিট করতে বলা হবে। ভিসা পাওয়ার পরপরই বিএমইটির ছাড়পত্র দিয়ে কর্মী পাঠানো শুরু হবে। ধারাবাহিক এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে চার থেকে পাঁচ দিন লাগবে। প্রবাসীকল্যাণসচিব জাফর আহমেদ খান প্রথম আলোকে বলেন, চলতি মাস থেকেই সরকারিভাবে কর্মী যাওয়ার বিষয়টি শুরু হবে। এরপর ধারাবাহিকভাবে কর্মী যাওয়া চলতেই থাকবে। দীর্ঘ চার বছর বাংলাদেশ থেকে কর্মী নেওয়া বন্ধ রাখে মালয়েশিয়া। দীর্ঘ কূটনৈতিক যোগাযোগের পর গত বছরের ২৬ নভেম্বর দুই দেশের মধ্যে সরকারিভাবে কর্মী পাঠানোর বিষয়ে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। এরপর গত ৩০ ডিসেম্বর মালয়েশিয়া প্রথম দফায় বনায়ন খাতের জন্য ১০ হাজার কর্মী নিয়োগের চাহিদাপত্র পাঠায়। এরপর বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন টেকনোলজির (আইআইসিটি) সহায়তায় বিএমইটি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অধীন এক্সেস টু ইনফরমেশন (এটুআই) প্রকল্পের অধীনে সারা দেশের ইউনিয়ন তথ্যসেবাকেন্দ্রগুলোতে নাম নিবন্ধন শুরু করে। গত ১৩ থেকে ২১ জানুয়ারি পর্যন্ত সারা দেশে সফলভাবে নিবন্ধন-প্রক্রিয়া শেষ হয়। মোট ১৪ লাখ ৪২ হাজার ৭৭৬ জন নাম নিবন্ধন করেন। এঁদের মধ্য থেকে ৩৬ হাজার ৩৮ জন প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত হন। এর মধ্য থেকে ১০ হাজার জন প্রথম দফায় মালয়েশিয়ায় যাবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published.