জরুরী সরকারি কাজে নিয়োজিত। ওমুক মন্ত্রণালয়ের জরুরী কাজে নিয়োজিত।
অাজ সকালে বসুন্ধরা মার্কেটের সামনে এমন অনেকগুলো গাড়ি দেখলাম। অবশ্য শুধু বসুন্ধরা নয়, ঢাকার নিউমার্কেটসহ বিভিন্ন মার্কেটের আশপাশে পাজেরোসহ যতো সরকারি গাড়ি আমাদের সরকারি চাকুরেদের স্ত্রী সন্তানের গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রীয় কাজে নিয়োজিত থাকে আর কোথাও বোধহয় থাকে না। শুধু মার্কেট কেন বিয়ে বাড়ি, বেঙ্গল মিউজকে ফেস্টিভলসহ যে কোন উৎসবে গেলেও এমন জরুরী কাজের গাড়ি দেখবেন। সরকারি তেলের কী দারুণ ব্যবহার। আহা গাড়িবিলাস!
বেশি দূরে যাওয়ার দরকার নেই। পাশের দেশ ভারতে যারা গেছেন তারা কী কখনো সেখানকার সরকারি কর্মকর্তাদের গাড়িগুলো দেখেছেন? আপনি যতো বড় আমলাই হন কিংবা যতো বড় সেনা কর্মকর্তা ওরা ওদের দেশের কম দামী গাড়িগুলো ব্যবহার করে। অামাদের দেশে থানার ওসির গাড়ির চেয়েও সেগুলোর দাম কম হবে। বাংলাদেশের মতো গাড়িবিলাস বোধহয় উন্নত অনেক দেশেও হয় না।
এ বছরের অক্টোবরে আমি যে কয়দিন কলকাতায় ছিলাম আমাদের এক ঘনিষ্ঠ বড় ভাই যিনি সরকারের একজন যুগ্ম সচিব প্রায় পুরোটা সময় আমার সাথে ছিলেন। বেশিরভাগ সময়ে তিনি আমার সাথে বাসে আবার কখনো বা ট্যাক্সিতে চড়েছেন।
অাপনি বাংলাদেশের যে কোন সরকারি দপ্তরে যান। সমস্যা কী জানতে চান। দেখবেন শুরুতে বা কিছুক্ষণ পরই তারা বলবো গাড়ি নেই। আমার সরকারি চাকুরি করা বন্ধুরা কীভাবে নেবেন জানি না কিন্তু বাংলাদেশে যতো হাজার হাজার কোটি টাকার গাড়ি বিলাসিতা করা হয় সেটা না করলে এদেশের বহু গরিব মানুষের ভাগ্য বদলে যেতে।
অামি জানি একশ্রেণীর কর্মকর্তা যেমন সরকারি গাড়ি অপব্যবহার করেন অাবার প্রয়োজনেও নানা ক্যাডারের কিছু লোক গাড়ি পায় না। অবশ্য কিছু সরকারি কর্মকর্তা অাছেন যারা ব্যতিক্রম যারা অপ্রয়োজনে গাড়ি ব্যবহার করেন না। তাদের স্যালুট। অাবার যাদের আচ্ছা আমরা কেন দেশেই গাড়ি তৈরি করতে পারি না? যদি সেটা পারতাম তবে তো সরকারি অফিস থানা পুলিশ সেনাবাহিনী সবার জন্য গাড়ি সরবরাহ করেই শেষ করতে পারতো না। রাষ্ট্রেরও কোটি টাকা বেঁচে যেতো। জানি না সেটা হবে কী না। এও জানি না মানুষের রক্ত ঘামের করের টাকায় কেনা গাড়িগুলো মার্কেটগুলোর সামনে আর কতোদিন এভাবে জরুরী কাজে থাকবে!