খুলনার কয়রা

Spread the love

ভুল প্রার্থীর কারণেই আ.লীগের পরাজয়

শরিফুল হাসান

২০০৯ সালের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে খুলনার কয়রা উপজেলায় আওয়ামী লীগ-সমর্থিত প্রার্থী জি এম মহসিন রেজা জামায়াত-সমর্থিত প্রার্থী আ খ ম তমিজউদ্দিনের চেয়ে সাত হাজারের বেশি ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছিলেন। সেই মহসিনই এবার ২০ হাজার ভোট কম পেয়ে জামায়াতের প্রার্থীর কাছে পরাজিত হয়েছেন।
উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন, আইলার টাকা নিয়ে দুর্নীতিসহ নানা অনিয়মের কারণে মহসিন রেজাকে আওয়ামী লীগ সরকারই চেয়ারম্যান পদ থেকে বরখাস্ত করেছিল। কিন্তু পরে তাঁকেই আবার দল থেকে সমর্থন দেওয়া হয়। এ ছাড়া এলাকার সাবেক ও বর্তমান সাংসদের মধ্যে দ্বন্দ্বের কারণে ব্যবধান আরও বেড়েছে।
কয়রায় বিপুল ভোটে পরাজিত হলেও খুলনার আরেক উপজেলা দীঘলিয়ায় ৮৭৮ ভোটের সামান্য ব্যবধানে জয়ী হয়েছেন আওয়ামী লীগ-সমর্থিত প্রার্থী খান নজরুল ইসলাম।
আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতারা বলছেন, ২০০৯ সালে পরাজিত হলেও এবার বর্তমান সাংসদ এলাকার দলের ভেতরের কোন্দল কমিয়ে আনতে পারায় নজরুল ইসলাম জয়ী হয়েছেন।
চতুর্থ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম দফায় গত বুধবার কয়রা ও দীঘলিয়া উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ওই দিন রাতে নির্বাচনের ফল ঘোষণা করা হয়।
আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন, নানা অভিযোগ থাকার পরও কয়রায় মহসিনকে সমর্থন দেওয়ার বিষয়টি ভালো চোখে দেখেননি স্থানীয় ভোটাররা। এ ছাড়া আইলার ত্রাণ নিয়ে আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ রয়েছে। এসব কারণেও ক্ষুব্ধ ছিলেন স্থানীয় লোকজন। ফলে সবাই আওয়ামী লীগ-সমর্থিত প্রার্থীর বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছেন।
জামায়াতের স্থানীয় নেতা-কর্মীরা বলছেন, কয়রায় তাঁরা সাংগঠনিকভাবে বেশ শক্তিশালী। এবার তাঁরা এই উপজেলায় জয়ী হওয়ার জন্য মরিয়া হয়ে কাজ করেন। উপজেলা বিএনপির সভাপতি মোমরেজুল ইসলাম ও বিএনপির নেতা সরদার মতিয়ারও মনোনয়নপত্র জমা দেন। কিন্তু পরে ১৯-দলীয় জোটের সিদ্ধান্তে তাঁরা দুজন নির্বাচন থেকে সরে যান। ফলে এখানে তমিজউদ্দিনের জয় অনেকটা সহজ হয়ে যায়।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি জি এম মতিউর রহমান বলেন, ‘আমাদের প্রথম ভুল হয়েছে প্রার্থী বাছাইয়ে। দুর্নীতির অভিযোগে যাঁকে চেয়ারম্যান পদ থেকে বরখাস্ত করা হয়েছিল, তাঁকেই আবার প্রার্থী করা ঠিক হয়নি। এর বদলে পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তির কাউকে প্রার্থী করা হলে পরিস্থিতি ভিন্ন হতে পারত।’ একই কথা বলেন জেলা আওয়ামী লীগের নেতা কেরামত আলীও।
কয়রা উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মাসুদুর রহমান বলেন, বিএনপি-জামায়াত এখানে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করেছে। আর বর্তমান সরকারের জুলুম, নির্যাতন ও আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতাদের দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি দেখে এলাকার মানুষ বিরক্ত। তাই ভোট দেওয়ার সুযোগ পেয়ে তাঁরা আওয়ামী লীগকে প্রত্যাখ্যান করেছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published.