শরিফুল হাসান
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে পাক হানাদার বাহিনী এই দেশে যে নৃশংস গণহত্যা চালিয়েছিল পৃথিবীর ইতিহাসে এমন বর্বরতা খুব বেশি ঘটেনি। বিশেষ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন স্থানে নির্বিচারে গণহত্যার ঘটনা বিরল। ৭১ এর সেই গণহত্যা অনুসন্ধান করতে গিয়ে বারবার শিউরে উঠেছি। তিন পর্বের ধারাবাহিক নিউজগুলো পড়তে গিয়ে অজানা অনেক তথ্য পাবেন।
২০১৭ সালে স্বাধীনতার ৪৬ বছর পর প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ পালন করছিল গণহত্যা দিবস। এ উপলক্ষ্যে ২০১৭ সালের মার্চজুড়ে ৭১ সালের গণহত্যার চিত্র তুলে ধরার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল প্রথম আলো। এরই অংশ হিসেবে ২৫ মার্চ রাতে অপরাশেন সার্চ লাইট পরিকল্পনা নিয়ে পাকবাহিনী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রাজারাগ পুলিশ লাইন এবং পিলখানায় যে হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে সে বিষয়ে তিন পর্বের সিরিজ করার দায়িত্ব পড়ে আমার ওপর।
গণহত্যা নিয়ে এই কাজ শুরু করতে গিয়ে দেখলাম ২৫ মার্চ রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রাজারবাগ পুলিশ লাইন আর পিলখানায় হামলা হয়েছে সবাই জানে কিন্তু এ বিষয়ে গুছিয়ে একসাথে সুনির্দিষ্ট করে বই বা ইতিহাস নেই। স্বাধীনতা যুদ্ধের দলিলপত্রে বিচ্ছিন্নভাবে অনেক কিছু থাকলেও একসাথে কিছু নেই। আবার এসব ঘটনার খুব বেশি প্রত্যক্ষদর্শীও এখন বেঁচে নেই।
গণহত্যার সঠিক ও বিস্তারিত তথ্য পেতে আমি মুক্তিযুদ্ধের নানা দলিল আর বইপত্রের শত শত পৃষ্ঠা পড়ছি। কখনো কখনো দিনে টানা ১৮-২০ ঘন্টা ধরে শুধুই পড়েছি আর নোট নিয়েছে। পড়তে পড়তে চোখ ঝাপসা হয়ে গেছে। চোখ ভিজে গেছে। মোটামুটি একটা চিত্র পাওয়ার পর মূল চ্যালেঞ্জ ছিলো প্রত্যক্ষদর্শী খুঁজে পাওয়া। সেই অভিজ্ঞতা বলছি।

১. তিন পর্বের গণহত্যা সিরিজের প্রথমটি ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণহত্যা নিয়ে। যেহেতু ঢাকা বিশ্ববিদ্যলয়ের ছাত্র ছিলাম তাও আবার সার্জেন্ট জহরুল হক হলের, কাজেই হলের দোতলায় উঠতে গিয়ে প্রতিদিন ২৫ মার্চ রাতে নিহতদের তালিকাটা চোখে পড়তো। সেই সূত্র হলের এক স্টাফের পরিবারকে পেলাম। মধুর ক্যান্টিনের অরুণ দার সাথে কথা বলে তার বাবা মধু দেসহ জগন্নাথ হলের হত্যার কিছুটা জানলাম।
জগন্নাথ হলের কয়েকজন ছোট ভাইকে কাজে লাগালাম সে সময়ের প্রত্যক্ষদর্শী কোন কর্মচারী বেঁচে আছে কী না সেটা খুঁজতে। নিজেও একটা রাত কাটালাম জগন্নাথ হলে। খোঁজ পেলাম ২৫ মার্চ শহীদ জগন্নাথ হলের তৎকালীন দারোয়ান সুনীল চন্দ্র দাসের স্ত্রী বকুল রানী দাসের। তার সাথে কথা বলে পূর্নাঙ্গ একটা চিত্র পেয়েছিলাম।
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ হলের ক্যান্টিনে দায়িত্বে ছিলেন এমন এক কর্মচারীকেও পেয়েছিলাম। আর জহরুল হক হলের দুই কর্মচারীকে খুঁজে বের করি যাদের বাবা ৭১ এ শহীদ হয়েছে। সবার সাথে কথা বলে ক্রসচেক করে একটা চিত্র দাঁড় করিয়েছিলাম।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক এবং সেন্টার ফর জেনোসাইড স্টাডিজের পরিচালক দেলোয়ার স্যার ও গণহত্যা নির্যাতন আর্কাইভ ও মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর ট্রাস্টের সভাপতি ইতিহাসবিদ মুনতাসীর মামুন স্যারও অনেক তথ্য দিয়েছেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণহত্যা নিয়ে কাজটা করতে গিয়ে মনে হয়েছে,
গণহত্যা নিয়ে যেভাবে পরিকল্পিত কাজ হওয়ার কথা ছিলো তা হয়নি। অথচ একটা বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে সেই গবেষণা হতে পারতো। কারণ পৃথিবীর আর কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে এভাবে গণহত্যা হয়নি। যাই হোক আমি সবকিছু মিলিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গণহত্যার মোটামুটি একটা চিত্র দাঁড় করানোর চেষ্টা করেছিলাম।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে হত্যাযজ্ঞ নিয়ে এই লিংকে গিয়ে https://www.prothomalo.com/…/%E0%A6%A2%E0%A6%BE%E0%A6… নিউজটা পড়তে পারেন।
২. বেস, ফর অল স্টেশন অব ইস্ট পাকিস্তান পুলিশ, কিপ লিসেনিং, ওয়াচ, উই আর অলরেডি অ্যাটাকড বাই দা পাক আর্মি, ট্রাই টু সেভ ইউরসেলভ, ওভার’।
বাংলা করলে দাঁড়ায় ‘পূর্ব পাকিস্তান পুলিশের সব স্টেশন, আপনারা মনোযোগ দিয়ে শুনুন, পাকিস্তানি সেনাবাহিনী আমাদের আক্রমণ করেছে। আপনারা আত্মরক্ষা করার জন্য তৈরি হন।’
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে দেশের সব পুলিশ স্টেশনে ওয়ারলেসের মাধ্যমে যিনি এই বার্তাটি ছড়িয়ে দিয়েছিলেন তাঁর নাম শাহজাহান মিয়া। ২৫ মার্চ রাতে তিনি রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সের বেতার অপারেটর ছিলেন। হেলিকপ্টার ব্যাজের একটি বেতারযন্ত্রের মাধ্যমে তিনি সারাদেশে বার্তাটি ছড়িয়ে দিয়েছিলেন। মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে কাজ করতে গিয়ে তাঁর সঙ্গে আমার আগেই পরিচয় হয়েছিল। তাঁর কাছ থেকে রাজারবাগ পুলিশ লাইনের গণহত্যা নিয়ে অনেক তথ্য জেনেছিলাম। পুলিশের মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর নিয়ে কাজ করতে গিয়ে আরও কিছু তথ্য ছিল।
বিশেষ করে পুলিশের যে ওয়ারলেস অপারেটর শাহজাহান ভাই যিনি ২৫ মার্চ রাতে রাজারবাগ আক্রমনের খবর সারা বাংলাদেশে জানিয়েছিলেন তার সাথে আমার নিয়মিত যোগাযোগ ছিল। শাজাহান ভাইসহ অন্য মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে কথা বলে রাজারবাগে গণহত্যার একটা চিত্র দাঁড় করিয়েছিলাম।
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালোরাতে সশস্ত্র পাক বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতিরোধের প্রথম গুলিটি ছুড়েছিলেন রাজারবাগের বীর পুলিশ সদস্যরা। রাজারবাগ ছিলো স্বাধীনতার প্রথম যুদ্ধক্ষেত্র। কেবলমাত্র থ্রি নট থ্রি রাইফেল নিয়ে আধুনিক অস্ত্রে সজ্জিত পাকবাহিনীর বিরুদ্ধে সারারাত লড়েছিলেন বাংলার বীর পুলিশ সদস্যরা। আর এই প্রতিরোধযুদ্ধের বার্তা ওয়ারলেসে ছড়িয়ে গিয়েছিলো সারাদেশে। বুকের মধ্যে কি প্রচণ্ড দেশপ্রমে আর সাহস থাকলে কেবলমাত্র ৩০৩ রাইফেল নিয়ে যুদ্ধ করা যায় সেটা দেখিয়েছিলো রাজারবাগ।
রাজারবাগের পুলিশ লাইনের সেই যুদ্ধের কথা সবাই কম বেশি জানলেও গণহত্যার চিত্র বিশেষ করে কতোজন মারা গিয়েছিল আর সেই পুলিশদের লাশ কোথায় নেয়া হয়েছিল সেটা আমার অজানই ছিলো। আমার নিউজে সেই চিত্রটাই তুলে ধরেছিলাম। ২৬ মার্চ ভোরেই নিহত পুলিশ সদস্যদের লাশ পাক আর্মির ৮-১০ টা ট্রাকে করে সরিয়ে নেয়া হয়েছিল।
রাজারবাগের গণহত্যা নিয়ে রাজারবাগ থেকে লাশ সরানো হয় ট্রাকে ট্রাকে শিরোনামে নিউজটা এই লিংকে গিয়ে https://www.prothomalo.com/…/%E0%A6%B0%E0%A6%BE%E0%A6… পড়তে পারেন। বিশেষ করে পুলিশ সদস্যদের বলবো বেশি করে পড়তে। তাতে জানতে পারবেন এক গৌরবমাখা ইতিহাস।
৩. গণহত্যারে তৃতীয় পর্ব ছিলো ইস্ট পাকিস্তান রাইফেলস নিয়ে বর্তমানে যার নাম বিজিবি। আমি জানতাম বিজিবি একটা আধাসামরিক বাহিনী। কাজেই এ নিয়ে তথ্য পাওয় কঠিন হবে। হলোও তাই। আরও বেশি সমস্যায় পড়ার কারণ ২৫ মার্চ রাতে পিলখানার ইতিহাস খুঁজতে গিয়ে দেখলাম এ বিষয়ে লেখা সবচেয়ে কম। এ নিয়ে কাজ হয়নি বললেই চলে।
বিস্তারিত তথ্য জানতে একদিন সারাদিন কাটালাম পিলখানায় বিজিবি সদর দপ্তরে। কিন্তু সারাদিন থেকেও ২৫ মার্চ রাতে ইপিআরের কতোজন সদস্য মারা গিয়েছিলেন, ঠিক কী হয়েছিল জানতে পারলাম না। বিজিবির জনসংযোগ কর্মকর্তার সাথে দেখা করলে তিনি মুক্তিযুদ্ধে ইপিআর নামে একটা বই দিলেন। মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে এটিই বিজিবির একমাত্র প্রকাশনা।
বইটির সম্পাদক মুক্তিযুদ্ধ গবেষক মেজর নূরুল আমিন হেলালের নম্বরও দিলেন তিনি। আরও কিছু জানতে সাংবাদিকতার সূত্রে ঘনিষ্ঠ বিজিবির এক কর্ণেলের সাথে যোগাযোগ করলাম। তাঁর সূত্রে বিজিবির আরেক কর্মকর্তার কাছ থেকে বিজিবির দুইশ বছেরর ইতিহাস নিয়ে একটা বড় বই পেলাম। প্রথম আলোর লাইব্রেরী থেকে পেলাম মুক্তিযুদ্ধে রাইফেলস নামে একটা বই।
বইপত্র তো গেলো প্রত্যক্ষদর্শী কই পাই? সারাদিন আমি আমার সীমিত সামর্থ্য দিয়ে নানা জায়গায় চেষ্টা করেও ২৫ মার্চ রাতে পিলখানায় ছিলেন এমন কোন প্রত্যক্ষদর্শীর নাম ঠিকানা পেলাম না। অথচ আমি আমার প্রত্যেকটা নিউজে প্রত্যক্ষদর্শীদের কথা দেয়ার চেষ্টা করেছি। কিন্তু বিজিবির ক্ষেত্রে কোনভাবেই সেটা পাচ্ছিলাম না।
দুদিন চেষ্টা করেও আমি যখন কোন প্রত্যক্ষদর্শী পেলাম না তখন মনে হলো শেষ চেষ্টা হিসেবে ফেসবুকে লিখি। ছোট্ট করে একটা স্ট্যাটাস দিলাম ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে পিলখানায় ছিলাম এমন কারো নম্বর কী কেউ আমায় দিতে পারেন?
স্ট্যাটাসটা দেয়ার পরেও কেউ কোন তথ্য দিতে পারছিলেন না। হঠাৎ করে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার এক সাংবাদিক মুক্তিযোদ্ধা রেজাউল করিমের কথা
জানালেন। তিনি ২৫ মার্চ রাতে ইপিআরে ছিলেন। আমি তখন অন্ধকারে কিছু একটা পাওয়ার আশায় যোগাযোগ করলাম রেজাউল করিমের সাথে। তার সাথে ঘন্টাখানেক কথায় একে একে পেয়ে গেলাম সব সূত্র।
রেজাউল করিম সেই ১০ জন ইপিআর সদস্যদের একজন যারা ২৩ মার্চ রাতে গোপনে পিলখানার একটা বটগাছে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উড়িয়ে দিয়েছিলেন। ২৫ মার্চ রাতে তিনি পিলখানা থেকে বেঁচে বেরিয়ে জিঞ্জিরায় প্রতিরোধযুদ্ধ গড়ে তোলেন। রেজাউল করিম জানালেন, স্বাধীনতার ৪৬ বছরে এই প্রথম কোন সাংবাদিক তার সাথে কথা বললো।
রেজাউল করিমের সাথে বলে তার সহায়তায় পেলাম সে সময়ের ঢাকা সেক্টর কমাণ্ডারের বডিগার্ড শাজাহান মিয়ার নম্বর। তিনি সেদিন রাতে অস্ত্র নিয়ে পিলখানা থেকে বেরিয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন।এই দুজনের স্বাক্ষাতকার পাওয়ায় নিউজটা করা আমার জন্য সহজ হয়ে উঠলো। তারা আমাকে জানালেন, পুলিশ যেমন অস্ত্রাগার ভেঙে অস্ত্র নিয়ে প্রতিরোধ যুদ্ধ করতে পেরেছি বিজিবি সেভাবে পারেনি। কারণ ২৫ মার্চ দুপুরেই পাকিস্তানি সেনাবাহিনী বিজিবির নিয়ন্ত্রণ নেয়। দুপুরেই তারা বাঙালিদের অবস্থান চিহিৃত করে ফেলে।
আপনারা অনেকেই জানেন বঙ্গবন্ধুকে গ্রেপ্তার এবং ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাত ১২ টায় ঢাকায় আক্রমন শুরুর পরই ২৬ মার্চ দিবাগত রাতে ছাত্রেনতাদের কাছ থেকে পাওয়া বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণাটি ওয়ারলেসের মাধ্যমে সারা দেশে পৌঁছে দিয়েছিলেন ইপিআরের মেজর সুবেদার সুবেদার শওকত আলী। তিনি ইপিআর থেকে টেলিগ্রাফিক মেসেজের মাধ্যমে এই ঘোষণা প্রচার করেছিলেন। কিন্তু পাকিস্তানি বাহিনীও সেই মেসেজ পেয়ে যায়। পরে ওই রাতেই তাকে গ্রেপ্তার ও নির্যাতন করে হত্যা করা হয়। আমি শওকত আলীর মেয়ের সাক্ষাতকার পেলাম। জানলাম তাঁর বাবাকে হত্যার কাহিনী।
সবমিলিয়ে আমি ইপিআরের ২৫ মার্চ রাতের গণহত্যা নিয়ে এই নিউজটা এই লিংকে গিয়ে https://www.prothomalo.com/…/%E0%A6%B0%E0%A6%BE%E0%A6… পড়তে পারেন।
গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি চাই: ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রাজারবাগ পুলিশ লাইন এবং পিলখানার ঘটনার ইতিহাস খুঁজতে গিয়ে আমার বারবার মনে হয়েছে, আমাদের আমাদের মুক্তিযুদ্ধের ক্যানভাস যতো বড়, মুক্তিযুদ্ধ আমাদের যতোটা গর্বের সেই তুলনায় আমাদের মুক্তিযুদ্ধ আর গণহত্যা নিয়ে কাজ হয়েছে খুবই কম। এ নিয়ে ভালো বই হাতে গোনা। নাটক, প্রামান্যচিত্র, সিনেমা নেই বললেই চলে।
স্বাধীনতার ৪৭ বছরেও আমরা আমাদের শহীদদের নাম বের করতে পারিনি।
ছয় বছর আগে আমার তিনটা নিউজেই আমি প্রত্যক্ষদর্শী ও মুক্তিযোদ্ধাদের পেয়েছিলাম। কিন্তু আর কয়েকবছর পর চাইলেও এই দেশে জীবিত মুক্তিযোদ্ধা খুঁজে পাওয়া যাবে না। আমি মনে করি জীবিত প্রত্যেক মুক্তিযোদ্ধার বীরত্বগাঁথা রেকর্ড করে রাখা উচিত। বিশেষ করে সেনাবাহিনী, ইপিআর আর পুলিশে ছিলেন এমন মুক্তিযোদ্ধাদের। কারণ নিরাপত্তাবাহিনীতে চাকুরি করতেন বলে তাদের সাথে খুব বেশি মানুষ কথা বলতে পারেনি। এই যেমন আমি ইপিআরের দুজন মুক্তিযোদ্ধার সাক্ষাতকার নিলাম যারা এর আগে গণমাধ্যমে কখনো কথা বলেননি।
এই কথাগুলো আগেও লিখেছি। আমাদের মুক্তিযুদ্ধ ও গণহত্যার পূর্ণাঙ্গ চিত্র সংরক্ষণ করা উচিত যাতে ভবিষ্যত প্রজন্ম জানতে পারে ঠিক কী হয়েছিল ১৯৭১ সালে। সারা পৃথিবীকেও এই গণহত্যা জনানো জরুরী। কারণ ৭১ এ যে গণহত্যা হয়েছে বাংলাদেশে এমন বর্বরতা খুব কম দেশেই ঘটেছে। আশা করছি রাষ্ট্র এ বিষয়ে উদ্যোগী হবে। উদ্যোগী হবো আমরা সবাই। স্বাধীনতার ৫২ বছরে এসে গণহত্যার শিকার প্রত্যকেটা মানুষকে শ্রদ্ধা, স্যালুট সব মুক্তিযোদ্ধাকে। আপনাদের ত্যাগ আর অর্জনেই পেয়েছি আমরা স্বাধীন বাংলাদেশ।