সাংবাদিককে তুলে নেওয়া!

Spread the love

শরিফুল হাসান

এই যে মধ্যরাতে একজন সাংবাদিককে তুলে নেওয়া, তারপর অস্বীকার, এরপর হাস্যকর এক মামলা, তারপর মামলা সম্পাদকের বিরুদ্ধে, ৩০ ঘন্টা পর সাংবাদিককে আদালতে তোলা, জামিন না দিয়ে জেলহাজতে পাঠানো, দেশে-বিদেশে নিন্দা, জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের কঠোর বিবৃতি, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক নিন্দা, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের শিশু নিপীড়নের হাস্যকর বিবৃতি, অবশেষে জামিন; সব মিলিয়ে সরকারের লাভটা হলো কী কেউ বলবেন কী?

আচ্ছা এই ঘটনায় রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশ কিংবা এই সরকারের এতটুকু কী অর্জন হলো? দীর্ঘ দুই যুগ যেহেতু সাংবাদিকতা করেছি এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে একটু আধটু সাংবাদিকতা পড়াই সে কারণেই জানতে চাইছি। আচ্ছা শামসকে গ্রেপ্তার না করলে কী এমন ক্ষতি হতো? আর গ্রেপ্তার করে কী এমন লাভ হয়েছে দয়া করে বলবেন কী?

আজ বিকেলে একটা স্ট্যাটাসে লিখেছিলাম, আমাদের মাঝে একটা ধারণা আছে দেশপ্রেম মানে দেশের সকল কিছু ভালোবাসতে হবে। কেউ দেশ নিয়ে সুন্দর কথা বললেই আমরা ভাবি সে দেশপ্রেমিক। সেই কথাগেলোর আদৌ ভিত্তি আছে কী না যাচাই করি না। উল্টোদিকে দেশের যে বিষয়গুলো খারাপ, যেগুলোর পরিবর্তন দরকার সেগুলো নিয়ে কেউ প্রশ্ন তুললেই আমরা ভাবি খারাপ। অথচ প্রকতৃ দেশপ্রেমিক তো সেই যে দেশের সমস্যাগুলো চিহিৃত করে, গঠনমূলকভাবে সমাধানের পথ বাতলে দেয়।

বাংলাদেশ ছাড়া আমি বিকল্প কিছু ভাবি না। গঠনমূলক সমালোচনার অংশ হিসেবেই বলছি, সরকারসহ সবার অর্জনে একটা দেশের আন্তর্জাতিক ভাবমূর্তি অর্জন হয় কিন্তু ক্ষতি হয় কিন্তু মোটাদাগে শুধু সরকারের কার্যক্রমে। এই যে দেখেন মুক্ত গণমাধ্যম সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান এমনিতেই পৃথিবীর মধ্যে তলানিতে। শামসকে হয়রানির ঘটনায় সেটি আরো তলানিতে নামবে। সে কারণেই প্রশ্ন, এই ঘটনায় সরকার ও বাংলাদেশের ক্ষতি ছাড়া লাভ কী হলো? আশা করছি নীতি নির্ধারকরা ভাববেন। সবাই ভালো থাকবেন। ভালো থাকুক বাংলাদেশ!

Leave a Reply

Your email address will not be published.