রুচিবোধ!

Spread the love

শরিফুল হাসান

আমরা কী আসলেই একটা রুচির দুর্ভিক্ষের মধ্যে পড়িনি? মামুনুর রশীদ কী আসলেই ভুল বলেছেন? এই যে তিনি বলেছেন, ‘আমাদের রাজনীতিও তো রুচিহীন হয়ে গেছে। ওই জায়গা থেকে ফিরিয়ে আনা কঠিন। রাজনীতি যদি সুস্থ হতো, দুর্নীতিপরায়ণ সমাজ যদি না হতো, তাহলে কিছু একটা হতো,’ এই কথাগুলো কী একেবারে মিথ্যা?

এককভাবে কারো নাম বলাটা অবশ্যই ঠিক হয়নি কিন্তু মামুনুর রশিদ যে রুচির দুর্ভিক্ষের কথা বলেছেন সেটা কী বেঠিক? আপনার কী মনে হয়? আমি কিন্তু অনেকগুলো কথার সাথে একমত। মামুনুর রশীদ বলেছেন, কুরুচি, কুশিক্ষা ও অপসংস্কৃতির এই উত্থান যেমন রাজনৈতিক সমস্যা, তেমনি আমাদের সাংস্কৃতিক সমস্যাও।’ তাহলে এ ধরনের সংকট থেকে উত্তরণের উপায় কী? তিনি বলেছেন, ‘উত্তরণের উপায় খুব কঠিন।

কারণ, আমাদের রাজনীতিও তো রুচিহীন হয়ে গেছে। ওই জায়গা থেকে ফিরিয়ে আনা কঠিন। রাজনীতি যদি সুস্থ হতো, দুর্নীতিপরায়ণ সমাজ যদি না হতো, তাহলে কিছু একটা হতো,’।এই কথাগুলোর সাথে দ্বিমত করতে পারছি না। কথায় কথায় মামুনুর রশীদ এ-ও বললেন, ‘আমাদের রাষ্ট্র তো কোনোভাবে রুচির উন্নয়নে কাজ করছে না।

তাই এখন আমার আর রাজনীতির কাছে, রাষ্ট্রের কাছে, সংস্কৃতির কাছে, কোথাও আবেদন-নিবেদন নেই। আমার আবেদন, যে মানুষগুলো সামাজিক কাজের প্রতি দায়বদ্ধ, তাঁদের প্রতি। তাঁদের বলতে চাই, আপনারা এগিয়ে আসুন। তাঁরাই যদি আওয়াজ তোলেন, সারা দেশে মানুষ যদি প্রশ্ন করতে শুরু করে, মানুষ যদি সব ধরনের অন্যায়ে বাধা দেয়, বলতে থাকে, এটা ঠিক হচ্ছে না; এটা করতে পারবে না, তাহলেই হবে।

কিন্তু আমাদের দেশের মানুষ তো বাধা দেওয়াও ভুলে গেছে। কথার কথা, কাল মুরগির দাম ছিল ১০০ টাকা, আজ হয়ে গেছে ১৫০ টাকা। তারপরও কিন্তু মানুষ কিনছে!’দেশের বাইরের উদাহরণ টেনে এনে মামুনুর রশীদ বললেন, ‘পৃথিবীর অন্যান্য দেশে তো সাধারণ মানুষ বাধা দেয়। অস্ট্রেলিয়াতে একবার দেখেছি, একদিন সকালে হঠাৎ কলার দাম বেড়ে গেল। ওদের প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে সব রাষ্ট্রব্যবস্থা এ নিয়ে তোলপাড়।

শেষমেশ দাম কমাতে বাধ্য হলো। বাইরে থেকে আমদানি করা শুরু করল, তখন ব্যবসায়ীরাও বিপদে পড়ে গেলেন। আর আমাদের এখানে রাষ্ট্র কোনো ধরণের ব্যবস্থা নেয় না, আর মানুষও এত বেশি দাম সত্ত্বেও সবকিছু মনে নিচ্ছে! মেনে নিচ্ছে বলেই ব্যবসায়ীরা যা খুশি করছেন। বাংলাদেশ একটা ব্যবসায়ীদের রাষ্ট্র হয়ে গেছে, আ স্টেট অব বিজনেসম্যান।’আমি কথাগুলোর সাথে একমত। ক্ষোভ থেকে মামুনুর রশিদ বলেন, ‘আজ থেকে ৫০-৬০ বছর আগে শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন বলেছিলেন, দেশে একটা রুচির দুর্ভিক্ষ চলছে। আমরা সেই রুচির দুর্ভিক্ষের মধ্যে পড়ে গেছি।

আজ আমাদের অবকাঠামোগত অনেক উন্নয়ন হচ্ছে। কী সুন্দর রাস্তাঘাট হচ্ছে, মেট্রোরেল হচ্ছে, আমরা খুব মুগ্ধ। দেশের মানুষের কষ্টের অবসান হবে। কিন্তু দেশের মানুষের সংস্কৃতি ও রুচিই যদি ঠিক না করা যায়, এসব কে ব্যবহার করবে, তাই সংস্কৃতি ও রুচির উন্নয়নে কাজ করতে হবে।’আমি এই কথাগুলোর সাথেও একমত।

তবে আমি রুচির জায়গায় মূল্যবোধ যোগ করবো। আমি বলবো আমাদের চারপাশে অবকাঠামোগত অনেক উন্নয়ন হচ্ছে, অধিকাংশ মানুষ টাকার পেছনে ছুটছে। কিন্তু দিনকে দিন মূল্যবোধের চরম অবক্ষয় ঘটছে। সুশাসনের ভয়াবহ অভাব।

এই মূল্যবোধ আর সুশাসন ছাড়া একটা দেশের উন্নয়ন টেকসই হয় না। কাজেই আমি চাই আমাদের সবার মধ্যে বোধ ফিরুক। মূল্যবোধ ফিরুক। মানবতা জাগুক। সুশাসন প্রতিষ্ঠা হোক।

https://l.facebook.com/l.php?u=https%3A%2F%2Fwww.prothomalo.com%2Fentertainment%2Ftv%2F55l5p1uaho%3Ffbclid%3DIwAR0ZAJBflUrDYlGNsdv_nPF80KLggaylaP_3wdJbfzAb57kChwDxEQAAJq4&h=AT0AviCokU1gVjkVFVDml4HwrdbJ0Np8yDch5SkahQ-dVVd74u8iWhC_HTcFGWnVO0EvcI-PQCFbDRVV53Yid4FpLr0Rkz1J8ihdjyWQJOWSfDMJ_3T-loEm93TXKecbX9GM&tn=R]-R&c[0]=AT3pUTzGyoqwhSiplC5VbAXYYBP-7FluD3jmRo7F6CaNAAU-o9P_8deZQiDadZHNbitKNKrqOtFkJO0k3WDzbcmpOR3EMNJfy3fiZrPWi-fe1psW54sRNToY-1btI76VVP3ciIXsuNwKIe2Db5NH90es3AH52mED87Al2sGMQvCokF4

All reactions:2.3K2.3K14559LikeCommentShare

Leave a Reply

Your email address will not be published.