মুক্তির অপেক্ষায় কুয়েতের জেলে ১৬৮ বাংলাদেশি

Spread the love

শরিফুল হাসান

কুয়েতের দোয়ারে আজম জেলে বন্দী ১৬৮ বাংলাদেশি তাঁদের গ্রেপ্তারের প্রতিবাদ জানিয়েছেন। বিনা অপরাধে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে তাঁরা দাবি করেছেন। মুক্তির জন্য তাঁরা অনশনও শুরু করেছিলেন। তবে দূতাবাস যোগযোগ করলে মুক্তি দেওয়া হবে, জেল কর্তৃপক্ষ এই আশ্বাস দেওয়ায় অনশন ভেঙেছেন। বন্দীরা কূটনীতিক যোগাযোগের মাধ্যমে তাঁদের মুক্ত করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। না হলে তাঁরা অনশনসহ আরও প্রতিবাদ কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন।রাবেয়া আক্তার নামে এক গৃহিণী টেলিফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘কুয়েতের ওই জেলে তাঁর ভাই জসীমউদ্দিন আটক রয়েছেন। তিনি ফোন করে জানিয়েছেন, তাঁরা খাওয়াদাওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন। কাজেই সরকার যেন দ্রুত তাঁদের মুক্তির উদ্যোগ নেয়।’কুয়েতের ওই জেলে আটক আব্দুল আউয়াল নামে একজন মোবাইল ফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘অনেক দিন থেকে তিনি কুয়েতে আছেন। পাসপোর্ট না থাকার অপরাধে পুলিশ চার মাস আগে সন্দেহভাজন হিসেবে গ্রেপ্তার করে দোয়ারে আজম জেলের অপরাধ তদন্ত বিভাগে (সিআইডি) নিয়ে আসে। তাঁর মতো আরও ১৬৮ জন বাংলাদেশি এখানে বন্দী আছেন। মুক্তির দাবিতে তাঁরা গত শুক্রবার খাওয়াদাওয়া বন্ধ করে দেন। বাংলাদেশি দূতাবাস যোগযোগ করলে মুক্তি দেওয়া হবে, জেল কর্তৃপক্ষ এই আশ্বাস দেওয়ায় তাঁরা অনশন ভেঙেছেন। কিন্তু মুক্তি না দেওয়া হলে তাঁরা আবার অনশনে যাবেন।’জেলে আটক কুমিল্লার শরিফ আহমেদ, মুন্সিগঞ্জের দেলোয়ার হোসেন, মোহাম্মদ ইসমাইল, নোয়াখালীর শরিফুল হাসেন, মানিকগঞ্জের সানোয়ার, চাঁদপুরের সাজু মিয়া, কুমিল্লার নাঙ্গলকোটের লোকমান হোসেন, চাঁদপুরের লুত্ফুর রহমান, সুনামগঞ্জের আজমল আলীসহ আরও কয়েকজনের সঙ্গে কথা হয়। তাঁরা সবাই সরকারের কাছে দ্রুত তাঁদের জেল থেকে মুক্ত করার উদ্যোগ নেওয়া আহ্বান জানান। তাঁরা এ ব্যাপারে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও প্রবাসীকল্যাণমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন। কান্নাজড়িত কণ্ঠে এই শ্রমিকেরা জানান, অপরাধ করায় অনেক বাংলাদেশিই জেলে আছেন। কিন্তু তাঁরা কোনো অপরাধ করেননি। সন্দেহজনকভাবে তাঁদের আটক করা হয়েছে এবং দিনের পর দিন তাঁদের জেলে থাকতে হচ্ছে। কূটনৈতিক উদ্যোগই তাঁদের মুক্ত করতে পারে। এ বিষয়ে দূতাবাসে যোগাযোগ করলে এক কর্মকর্তা জানান, কুয়েতের বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রথম সচিব ও শ্রম কাউন্সিলর কে এম আলী রেজা গতকাল মঙ্গলবারই কাজে যোগ দিয়েছেন। এখনো তিনি এ ব্যাপারে উদ্যোগ শুরু করতে পারেনিন। শ্রম কাউন্সিলর আজ বুধবার বা কালই সেখানে যাবেন এবং বাংলাদেশি শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলবেন।ওই কর্মকর্তা জানান, দূতাবাস এই ১৬৮ বাংলাদেশির মুক্তির চেষ্টা চালাচ্ছে। তবে তাঁদের বেশির ভাগেরই আকামা নেই। পুলিশ তাঁদের বিষয়ে তদন্ত করছে। তদন্ত শেষ না হওয়ায় মুক্তির প্রক্রিয়া বিলম্বিত হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.