নওগাঁ সুলতানা জেসমিনের মৃত্যু

Spread the love

শরিফুল হাসান

স্বাধীনতার আলাপে নওগাঁ ভূমি অফিসের সহকারী সুলতানা জেসমিনের মৃত্যর বিষয়টি প্রায় হারিয়ে গেছে। আফসোস এই ঘটনায় সরকারি কর্মকর্তাদের সেভাবে প্রতিবাদ করতে দেখলাম না। দেখিনি কোন বিবৃতি। তারা প্রায় নিশ্চুপ। অথচ সুলতানা একজন সরকারি কর্মচারী ছিলেন। কারণটা বোধহয় এই সুলতানা খুব ছোট পদে চাকরি করতেন আর তাঁর বিরুদ্ধে যিনি অভিযোগ করেছেন তিনি একজন যুগ্ম সচিব। ফেসবুকের খুব বেশি মানুষকেও এই ঘটনায় প্রতিবাদ করতে দেখিনি। অথচ এখানে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা স্পষ্ট।

আইনমন্ত্রী আনিসুল হক খুব পরিস্কার করে বলেছেন, সুলতানাকে যখন তুলে নেওয়া হয়, তখন কিন্তু তাঁর বিরুদ্ধে কোন মামলা ছিল না। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনেও তাকে ধরা হয়নি। তিনি যখন মারা যান, তখনো ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা ছিল না। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়েছে তার পরের দিন। এখানে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অপব্যবহার করা হয়েছে।

আচ্ছা ঘটনা যদি উল্টোটা ঘটতো! একজন ভূমি অফিসের সহকারী অভিযোগ করতেন একজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। আদৌ কি কখনো তিনি বিচার পেতেন? তখন কী অফিসে যাওয়ার পথে কেউ তাকে তুলে নেওয়ার সাহস করতেন? তাকে কী তখন এভাবে মরতে হতো? তখন কী এই দেশের বাকি সরকারি কর্মকর্তারা এভাবে চুপ থাকতেন?

আফসোস একজন সিঙ্গেল মাদার যিনি ১৭ বছর ধরে একমাত্র ছেলেকে নিয়ে জীবনযুদ্ধ করছেন, একটা ছোট্ট চাকরি করে ছেলেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করিয়েছেন তাকে এভাবে মরতে হলো! অথচ তাঁর বিরুদ্ধে যে অভিযোগ সেটি তদন্তের জন্য বিভাগীয় তদন্ত কিংবা সর্ব্বোচ্চ পুলিশি তদন্তই যথেষ্ঠ ছিল!

কিন্তু কেন একজন যুগ্ম সচিব পর্যায়ের কর্মকর্তা থানা বা পুলিশের কাছে না গিয়ে র‌্যাবের টহল দলের সঙ্গে গেলেন, আগে কোন মামলা না থাকলেও কেন একজন নারীকে অফিসে যাওয়ার সময় তুলে নেওয়া হলো, কীভাবে তাঁর মৃত্যু হলো-এই প্রত্যকেটা প্রশ্ন গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু এসব নিয়ে সরকারি কর্মকর্তা বা সাধারণ মানুষ কারো খুব বেশি শব্দ নেই কারণ সুলতানা একজন অফিস সহকারী! আর যার অভিযোগ তিনি বড় পদে আছেন।

আইনমন্ত্রী আনিসুল হক স্পষ্ট করে বলেছেন, এই ঘটনায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অপব্যবহার করা হয়েছে।আফসোস এমন অপব্যবহারের পরেও জঘন্য এই আইন বাতিল হয় না। কারণ এই সব আইন করাই হয় সাধারণ মানুষের ওপর ক্ষমতাশালীদের ক্ষমতা দেখানোর জন্য। সে কারণেই বারবার বলি, কালো এই আইন বাতিল করা হোক।

Leave a Reply

Your email address will not be published.