ব্যান্ডদলের মাধ্যমে মালয়েশিয়ায় আদম পাচারের চেষ্টা!

Spread the love

শরিফুল হাসান

জনপ্রিয় ব্যান্ডশিল্পী জেমসের মালয়েশিয়া সফরের মধ্য দিয়ে আদম পাচারের চেষ্টা করছে একটি চক্র। আজ শুক্রবার রাতে জেমসের মালয়েশিয়া সফরের কথা।এই সফরের জেমসের সাতজন সফরসঙ্গীর সঙ্গে আরও ১১ জন লোককে মালয়েশিয়ায় পাচারের জন্য ভিসা নেওয়া হয়েছে। এ জন্য সাড়ে ২৫ হাজার রিঙ্গিত (প্রায় সাড়ে ছয় লাখ টাকা) নেওয়া হয়েছে ওই ১১ জনের কাছ থেকে। তবে প্রতারণার বিষয়টি জানতে পেরে গতকাল রাতে জেমস জানিয়েছেন, তাঁরা এই কনসার্টে যাচ্ছেন না। মালয়েশিয়ার একটি সূত্র জানিয়েছে, ক্রসওয়ার প্রডাকশনস নামের একটি প্রতিষ্ঠান ২৫ জুন মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরে নেগারা স্টেডিয়ামে এবং ২৬ জুন সিঙ্গাপুরে একটি কনসার্টের আয়োজন করেছে। এই ইভেন্ট প্রতিষ্ঠান এ জন্য জেমসের সঙ্গে মোট ১৮ জন লোক নিচ্ছে। মালয়েশিয়া এবং সিঙ্গাপুর উভয় দেশ থেকে এই ১৮ জনের ভিসা নেওয়া হয়েছে।এই ১৮ জন হলেন মাহফুজ আনাম জেমস, রুবাইয়াত ঠাকুর, সুলতান রহমান খান, জাহিদ হোসেন সারোয়ার, ইমতিয়াজ আল আজিম, খায়েম আহমেদ, মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী, মোহাম্মদ আল আমিন, মোহাম্মদ জাকারিয়া, আবু হানিফ, মো. আলামিন, মোয়াজ্জেম হোসেন, মো. আবুল হোসেন, বাবুল দেওয়ান, হাফিজুর, মো. রনি, মো. আলাউদ্দিন এবং মোহাম্মদ রুবেল।জানা গেছে, এই ১৮ জনের মধ্যে প্রথম সাতজন জেমসের ব্যান্ডদল নগরবাউলের শিল্পী। বাকি ১১ জনকে পাচার করা হচ্ছিল। এই ১১ জনকে মালয়েশিয়ায় কাজ করতে নেওয়ার জন্য মালয়েশিয়ার ক্রসওয়ার প্রডাকশনস স্থানীয় দালালদের কাছ থেকে ২৫ হাজার ৭০০ রিঙ্গিত (১ রিঙ্গিত বাংলাদেশি মুদ্রায় ২৫ টাকা) নিয়েছে। মালয়েশিয়ার মে ব্যাংকের দুটি চেকের মাধ্যমে এই টাকা নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে একটি চেকে পাঁচ হাজার ৫০০ এবং আরেকটি চেকে ১৫ হাজার ৭০০ রিঙ্গিত নেওয়া হচ্ছে।জেমসের এই দলকে বাংলাদেশ থেকে নিতে ক্রসওয়ার প্রডাকশনসের একজন প্রতিনিধি হারজিত সিং এখন ঢাকায় আছেন। জানা গেছে, তিনিই জেমসের দলকে আজ রাতে বিমান বাংলাদেশের একটি ফ্লাইটের মাধ্যমে মালয়েশিয়া নিয়ে যাবেন। তিনিই কাজে নেওয়ার কথা বলে ওই ১১ জনের কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন। ইতিমধ্যে মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুরে এই কনসার্টের ব্যাপারে ব্যাপক প্রচারণা চালানো হচ্ছে। ক্রসওয়ারের ওয়েবসাইটেও এই কনসার্টের ব্যাপারে বিস্তারিত দেওয়া আছে। মালয়েশিয়ার মোবাইল সিম বিক্রিকারী প্রতিষ্ঠান সেলকম এই কনসার্টের স্পনসর। অনুষ্ঠান সামনে রেখে তারা টিকিট ও সিম বিক্রি করছে।জানা গেছে, মালয়েশিয়ার একটি দালাল চক্র দীর্ঘদিন ধরেই এভাবে শিল্পীদের ব্যানারে আদম পাচার করছে। সম্প্রতি মালয়েশিয়ায় পর্যটন ভিসায় কড়াকড়ি হওয়ায় এই পদ্ধতিতে আদাম পাচারের ব্যবহার আরও বেড়েছে।এ বিষয়ে জানতে গতকাল রাতে যোগাযোগ করা হলে জেমসের ব্যান্ডদল নগরবাউলের ব্যবস্থাপক রুবাইয়াত ঠাকুর প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদেরও ওই প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম সন্দেহজনক মনে হয়েছে। তারা আমাদের কথা বলে একসঙ্গে অনেক লোকের ভিসা নিচ্ছে বলে সন্দেহ করেছি। তাই আমরা বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আমরা মালয়েশিয়ায় যাব না।’ব্যান্ডদল নগরবাউলের প্রধান জেমস প্রথম আলোকে বলেন, ‘এ ধরনের প্রতারক চক্রের ব্যাপারে শিল্পীসহ সবার সাবধান হওয়া উচিত। এ ব্যাপারে দূতাবাসগুলোকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে যাতে করে প্রতারক চক্রকে খুঁজে বের করা যায়। আর প্রবাসী বাংলাদেশিদেরও এসব ব্যাপারে একটু উদ্যোগী হওয়া দরকার। একই সঙ্গে তিনি এই প্রতারণার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের শাস্তিরও দাবি জানান।

Leave a Reply

Your email address will not be published.