বাঙালির গৌরবের ইতিহাস ১৯৭১। তবে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস নিয়ে আমরা যতো কথা বলি যতোটা গর্ব করি, ২৫ মার্চ রাতসহ পুরো নয়টা মাস এই বাংলায় যে গণহত্যা হয়েছিল সে বিষয়ে আমরা সেভাবে কথা বলি না। গতানুগতিক ধারার বাইরে গিয়ে প্রথম আলো এ বছর মার্চজুড়ে ৭১ এর সেই গণহত্যার চিত্র তুলে ধরার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ১ মার্চ থেকে সেটি শুরু হয়েছে। এরই অংশ হিসেবে ২৫ মার্চ রাতে অপরাশেন সার্চ লাইট পরিকল্পনা নিয়ে পাকিবাহিনী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রাজারাগ পুলিশ লাইন এবং পিলখানায় যে হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে সে বিষয়ে তিনটি প্রতিবেদন করার দায়িত্ব পড়ে আমার ওপর।
সময় বেশ কম। কাজ শুরু করতে গিয়ে দেখলাম ২৫ মার্চ রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রাজারবাগ পুলিশ লাইন আর পিলখানায় হামলা হয়েছে সবাই জানে কিন্তু এ বিষয়ে গুছিয়ে একসাথে সুনির্দিষ্ট করে কোন লেখা নেই। আবার এসব ঘটনার খুব বেশি প্রত্যক্ষদর্শীও এখন বেঁচে নেই। আমার সম্বল তখন প্রথম আলোর লাইব্রেরীতে থাকা মুক্তিযুদ্ধের নানা দলিলপত্র এবং এ বিষয়ক কিছু বই। ঢাকা থেকে খুলনায় গিয়ে গণহত্যা জাদুঘরে কাজ শুরু করা Kajal Abdullah আমাকে এ ক্ষেত্রে সহযোগিতা করলো কিছু নাম দিয়ে।
গণহত্যার সঠিক চিত্র আঁকতে আমি সেসব দলিল আর বইপত্রের শত শত পৃষ্ঠা পড়া শুরু করলাম। একটার পর একটা বই পড়ছি। গুরুত্বপূর্ণ যেটা মনে হচ্ছে সেটার নোট নিচ্ছি। অন্তত এক সপ্তাহ আমি টানা ১৮-২০ ঘন্টা ধরে শুধুই পড়েছি আর নোট নিয়েছে। পড়তে পড়তে চোখ ঝাপসা হয়ে গেছে। কোমর ব্যাথ্যা হয়ে গেছে বসে থাকতে থাকতে। তবুও চেষ্টা করেছি কাজা থামাতে।
১.আমার তিন পর্বের গণহত্যা সিরিজের প্রথমটি ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণহত্যা। আমি যেহেতু ঢাকা বিশ্ববিদ্যলয়ের ছাত্র ছিলাম তাও আবার জহরুল হক হলের কাজেই হলের দোতলায় উঠতে গিয়ে প্রতিদিন ২৫ মার্চ রাতে নিহতদের তালিকাটা চোখে পড়তো। জগন্নাথ হলের গনকবর সম্পর্কেও জানা ছিলো। তবে তথ্য খুঁজতে গিয়ে অধ্যাপক রতনলাল চক্রবর্তীর সম্পাদনায় প্রকাশিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গণহত্যা: ১৯৭১ জগন্নাথ হল বইটি আমাকে সবচেয়ে বেশি সহায়তা করলো। এছাড়া রঙ্গলাল সেন সম্পাদিত বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ঢাকা ও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবদান বইটিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণহত্যার মোটামুটি একটা চিত্র পেলাম। রশীদ হায়দার সম্পাদিত ১৯৭১: ভয়াবহ অভিজ্ঞতা বইটিও আছে গণহত্যার কিছু বর্ণনা। পাকিস্তানি হানাদার টিক্কা খানের জনসংযোগ কর্মকর্তা মেজর সিদ্দিক সালিেকর উইটনেস টু স্যারেন্ডার বইটাও আমাকে সহায়তা করলো। পড়লাম রিটিশ সাংবাদিক সায়মন ড্রিংয়ের স্মৃতিচারণা।
ইতিহাস তো পেলাম এবার প্রত্যক্ষদর্শী খোঁজার পালা। মধুর ক্যান্টিনের অরুণ দার সাথে কথা বলে তার বাবা মধু দেসহ জগন্নাথ হলের হত্যার কিছুটা জানলাম। জগন্নাথ হলের কয়েকজন ছোট ভাইকে কাজে লাগালাম সে সময়ের প্রত্যক্ষদর্শী কোন কর্মচারী বেঁচে আছে কী না সেটা খুঁজতে। নিজেও একটা রাত কাটালাম জগন্নাথ হলে। খোঁজ পেলাম ২৫ মার্চ শহীদ জগন্নাথ হলের তৎকালীন দারোয়ান সুনীল চন্দ্র দাসের স্ত্রী বকুল রানী দাসের। তার সাথে কথা বলে পূর্নাঙ্গ একটা চিত্র পেলাম। ২৫ মার্চ হলের ক্যান্টিনে দায়িত্বে ছিলেন এমন এক কর্মচারীকেও পেলাম। জহরুল হক হলের দুই কর্মচারীকে খুঁজে বের করলাম যাদের বাবা ৭১ এ শহীদ হয়েছে। সবার সাথে কথা বলে ক্রসচেক করে একটা চিত্র দাঁড় করলাম। কথা বললাম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক এবং সেন্টার ফর জেনোসাইড স্টাডিজের পরিচালক দেলোয়ার স্যার ও গণহত্যা নির্যাতন আর্কাইভ ও মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর ট্রাস্টের সভাপতি ইতিহাসবিদ মুনতাসীর মামুনের স্যারের সাথে।
এই কাজটা করতে গিয়ে দেখেছি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণহত্যা নিয়ে যেভাবে পরিকল্পিত কাজ হওয়ার কথা ছিলো সেভাবে হয়নি। অথচ একটা বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে সেই কাজটা হতে পারতো। কারণ পৃথিবীর আর কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে এভাবে গণহত্যা হয়নি। আশা করি বিশ্ববিদ্যালয় সেই কাজটা ভবিষ্যতে করবে। আমি সবকিছু মিলিয়ে মোটামুটি একটা চিত্র দাঁড় করাতে পেরেছি।
যারা পড়েননি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণহত্যা নিয়ে করা আমার নিউজটা পড়ে দেখতে পারেন এই লিংকে গিয়ে। (http://www.prothom-alo.com/…/%E0%A6%A2%E0%A6%BE%E0%A6%95%E0…)
২. আমার দ্বিতীয় প্রতিবেদনটি ছিল রাজারবাগ পুলিশ লাইনের গণহত্যা নিয়ে। মুক্তিযুদ্ধে পুলিশের ভূমিকা বইটা এক্ষেত্রে বেশ কাজে আসলো। বইটা যোগাড় করে দিলো পুলিশে থাকা আমার বন্ধু Sudipto Sarker। মুক্তিযুদ্ধে প্রথম প্রতিরোধ নামে পুলিশের একটা প্রকাশনা আগে থেকেই আমার কাছে ছিল। সেটাও কাজে আসলো। পুলিশের বর্তমান এআইজি আবিদা আপার পুলিশের রক্তের ঋণ বইটাও কাজে আসলো।
বইপত্র তো গেল। এবার আসি প্রত্যক্ষদর্শীদের কথায়। এক্ষেত্রে আমার নিজের অভিজ্ঞতাই কাজে লাগলো। কারণ চার বছর আগে যখন পুলিশের মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর প্রতিষ্ঠা করা হয় তখন আমি এ নিয়ে একটা রিপোর্ট করেছিলাম। সেই সময় পুলিশের জীবিত মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মামনা জানানোর একটা অনুষ্ঠানে গিয়ে আমি কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধার মোবাইল নাম্বার ডায়েরিতে লিখে রেখেছিলাম। বিশেষ করে পুলিশের যে ওয়ারলেস অপারেটর Md Shahjahan Mia যিনি ২৫ মার্চ রাতে রাজারবাগ আক্রমনের খবর সারা বাংলাদেশে জানিয়েছিলেন তার সাথে আমার নিয়মিত যোগাযোগ আছে। কাজেই শাজাহান ভাইসহ অন্য মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে কথা বলে একটা চিত্র দাঁড় করলামা। কথা হলো মুক্তিযুদ্ধকালীন সাবসেক্টর অধিনায়ক এবং মুক্তিযুদ্ধ গবেষক এ এস এম সামছুল আরেফিন স্যারের সাথেও।
আপানার জানেন ২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তান বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রথম প্রতিরোধযুদ্ধ গড়ে তুলেছিল বাংলাদেশ পুলিশ। রাজারবাগের পুলিশ লাইনের সেই যুদ্ধের কথা সবাই কম বেশি জানলেও গণহত্যার চিত্র বিশেষ করে কতোজন মারা গিয়েছিল আর সেই পুলিশদের লাশ কোথায় নেয়া হয়েছিল সেটা আমার অজানই ছিলো। আমার নিউজে সেই চিত্রটাই তুলে ধরলাম ২৬ মার্চ ভোরেই নিহত পুলিশ সদস্যদের লাশ পাক আর্মির ৮-১০ টা ট্রাকে করে সরিয়ে নেয়া হয়েছিল।
রাজারবাগের গণহত্যা নিয়ে যারা নিউজটা পড়েননি পড়তে পারেন এই লিংকে গিয়ে। (http://www.prothom-alo.com/…/%E0%A6%B0%E0%A6%BE%E0%A6%9C%E0…)
৩.আমার তৃতীয় পর্ব ছিলো ইস্ট পাকিস্তান রাইফেলস নিয়ে বর্তমানে যার নাম বিজিবি। আমি জানতাম বিজিবি একটা আধাসামরিক বাহিনী। কাজেই এ নিয়ে তথ্য পাওয় কটিন হবে। হলোও তাই। আরও বেশি সমস্যায় পড়ার কারণ ২৫ মার্চ রাতে পিলখানার ইতিহাস খুঁজতে গিয়ে দেখলাম এ বিষয়ে লেখা সবচেয়ে কম। বিস্তারিত তথ্য জানতে একদিন সারাদিন কাটালাম বিজিবি সদর দপ্তরে। কিন্তু সারাদিন থেকেও ২৫ মার্চ রাতে ইপিআরের কতোজন সদস্য মারা গিয়েছিলেন, ঠিক কী হয়েছিল জানতে পারলাম না। বিজিবির জনসংযোগ কর্মকর্তার সাথে দেখা করলে তিনি মুক্তিযুদ্ধে ইপিআর নামে একটা বই দিলেন। মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে এটিই বিজিবির একমাত্র প্রকাশনা। বইয়ের সম্পাদক মুক্তিযুদ্ধ গবেষক মেজর নূরুল আমিন হেলালের নম্বরও দিলেন তিনি। আরও কিছু জানতে সাংবাদিকতার সূত্রে ঘনিষ্ঠ বিজিবির এক কর্ণেলের সাথে যোগাযোগ করলাম। তাঁর সূত্রে বিজিবির আরেক কর্মকর্তার কাছ থেকে বিজিবির দুইশ বছেরর ইতিহাস নিয়ে একটা বড় বই পেলাম। প্রথম আলোর লাইব্রেরী থেকে পেলাম মুক্তিযুদ্ধে রাইফেলস নামে একটা বই।
বইপত্র তো গেলো প্রত্যক্ষদর্শী কই পাই? সারাদিন আমি আমার সীমিত সামর্থ্য দিয়ে নানা জায়গায় চেষ্টা করেও ২৫ মার্চ রাতে পিলখানায় ছিলেন এমন কোন প্রত্যক্ষদর্শীর নাম ঠিকানা পেলাম না। অথচ আমি আমার প্রত্যেকটা নিউজে প্রত্যক্ষদর্শীদের কথা দেয়ার চেষ্টা করেছি। কিন্তু বিজিবির ক্ষেত্রে কোনভাবেই সেটা পাচ্ছিলাম না। দুদিন চেষ্টা করেও আমি যখন কোন প্রত্যক্ষদর্শী পেলাম না তখন মনে হলো শেষ চেষ্টা হিসেবে ফেসবুকে লিখি। ছোট্ট করে একটা স্ট্যাটাস দিলাম ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে পিলখানায় ছিলাম এমন কারো নম্বর কী কেউ আমায় দিতে পারেন?
স্ট্যাটাসটা দেয়ার পরেও কেউ কোন ক্লু দিতে পারছিলেন না। হঠাৎ করে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার এক ছোট ভাই সাংবাদিক একজনের নম্বর দিলেন। বললেন তিনি মুক্তিযোদ্ধা রেজাউল করিম। ইপিআরে ছিলেন। বিস্তারিত জেনে তার সাথে কথা বলে জানি।
আমি তখন অন্ধকারে কিছু একটা পাওয়ার আশায় যোগাযোগ করলাম রেজাউল করিমের সাথে। তার সাথে ঘন্টাখানেক কথায় একে একে পেয়ে গেলাম সব সূত্র। রেজাউল করিম সেই ১০ জন ইপিআর সদস্যদের একজন যারা ২৩ মার্চ রাতে গোপনে পিলখানার একটা বটগাছে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উড়িয়ে দিয়েছিলেন। ২৫ মার্চ রাতে তিনি পিলখানা থেকে বেঁচে বেরিয়ে জিঞ্জিরায় প্রতিরোধযুদ্ধ গড়ে তোলেন।
রেজাউল করিম জানালেন, স্বাধীনতার ৪৬ বছরে এই প্রথম কোন সাংবাদিক তার সাথে কথা বললো। রেজাউল করিমের সাথে বলে তার সহায়তায় পেলাম সে সময়ের ঢাকা সেক্টর কমাণ্ডারের বডিগার্ড শাজাহান মিয়ার নম্বর। তিনি সেদিন রাতে অস্ত্র নিয়ে পিলখানা থেকে বেরিয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। এই দুজনের স্বাক্ষাতকার পাওয়ায় নিউজটা করা আমার জন্য সহজ হয়ে উঠলো। তারা আমাকে জানালেন, পুলিশ যেমন অস্ত্রাগার ভেঙে অস্ত্র নিয়ে প্রতিরোধ যুদ্ধ করতে পেরেছি বিজিবি সেভাবে পারেনি। কারণ ২৫ মার্চ দুপুরেই পাকিস্তানি সেনাবাহিনী বিজিবির নিয়ন্ত্রণ নেয়। দুপুরেই তারা বাঙালিদের অবস্থান চিহৃিত করে ফেলে।
আপনারা অনেকেই জানেন বঙ্গবন্ধুকে গ্রেপ্তার এবং ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাত ১২ টায় ঢাকায় আক্রমন শুরুর পরই ২৬ মার্চ দিবাগত রাতে ছাত্রেনতাদের কাছ থেকে পাওয়া বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণাটি ওয়ারলেসের মাধ্যমে সারা দেশে পৌঁছে দিয়েছিলেন ইপিআরের মেজর সুবেদার সুবেদার শওকত আলী। তিনি ইপিআর থেকে টেলিগ্রাফিক মেসেজের মাধ্যমে এই ঘোষণা প্রচার করেছিলেন। কিন্তু পাকিস্তানি বাহিনীও সেই মেসেজ পেয়ে যায়। পরে ওই রাতেই তাকে গ্রেপ্তার ও নির্যাতন করে হত্যা করা হয়। আমি শওকত আলীর মেয়ের সাক্ষাতকার পেলাম। জানলাম তাঁর বাবাকে হত্যার কাহিনী।
সবমিলিয়ে আমি ইপিআরের ২৫ মার্চ রাতের গণহত্যার যে নিউজটা লিখলাম চাইলে পড়ে দেখতে পারেন এই লিংকে (http://www.prothom-alo.com/…/%E0%A6%AA%E0%A6%BF%E0%A6%B2%E0…)
আরও কয়েকটা কথা : ২৫ মার্চ রাতের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রাজারবাগ পুলিশ লাইন এবং পিলখানার ঘটনার ইতিহাস খুঁজতে গিয়ে আমার বারবার মনে হয়েছে, আমাদের আমাদের মুক্তিযুদ্ধের ক্যানভাস যতো বড়, মুক্তিযুদ্ধ আমাদের যতোটা গর্বের সেই তুলনায় আমাদের মুক্তিযুদ্ধ আর গণহত্যা নিয়ে কাজ হয়েছে খুবই কম। এ নিয়ে ভালো বই হাতে গোনা। নাটক, প্রামান্যচিত্র, সিনেমা নেই বললেই চলে। স্বাধীনতার ৪৬ বছরেও আমরা আমাদের শহীদদের নাম বের করতে পারিনি।
আমি আমার তিনটা নিউজেই প্রত্যক্ষদর্শী ও মুক্তিযোদ্ধাদের পেয়েছি। কিন্তু আর দশ-বিশ বছর পর চাইলেও এই দেশে জীবিত মুক্তিযোদ্ধা খুঁজে পাওয়া যাবে না। আমি মনে করি মুক্তিযোদ্ধা সনদ দেয়ার চেয়েও এখন তাই জীবিত প্রত্যেক মুক্তিযোদ্ধার বীরত্বগাঁথা রেকর্ড করে রাখা উচিত। বিশেষ করে সেনাবাহিনী, ইপিআর আর পুলিশে ছিলেন এমন মুক্তিযোদ্ধাদের। কারণ নিরাপত্তাবাহিনীতে চাকুরি করতেন বলে তাদের সাথে খুব বেশি মানুষ কথা বলতে পারেনি। এই যেমন আমি ইপিআরের দুজন মুক্তিযোদ্ধার সাক্ষাতকার নিলাম যারা এর আগে গণমাধ্যমে কখনো কথা বলেননি। অবশ্য আমার নিউজ প্রকাশের পর আজই ঢাকা বাংলা চ্যানেলের প্রধান Pranabদা তাদের নম্বর নিয়েছে। আমি নিশ্চিত ডিবিসি তাদের সাক্ষাতকার নেবে।
আমার এতো কথার শেষ কথা হলো, আমার মনে হয় আমাদের মুক্তিযুদ্ধ ও গণহত্যার পূর্ণাঙ্গ চিত্র সংরক্ষণ করা উচিত যাতে ভবিষ্যত প্রজন্ম জানতে পারে ঠিক কী হয়েছিল ৭১ এ। আর সে কারণেই বেঁচে থাকা প্রত্যেক মুক্তিযোদ্ধার সাক্ষাতকার ও অভিজ্ঞতা রেকর্ড করে রাখা উচিত। তালিকা করা উচিত গণহত্যায় নিহত প্রত্যেক শহীদের। আশা করছি রাষ্ট্র এ বিষয়ে উদ্যোগী হবে। উদ্যোগী হবো আমরা সবাই। দেশে এতো টিভি, এতো গণমাধ্যম আমি বিশ্বাস করি আমরা সবাই চাইলেই এই কাজটা সম্ভব।