নারী জনশক্তি রপ্তানি বাড়ছে, সৃষ্টি হচ্ছে নতুন শ্রমবাজার

Spread the love

শরিফুল হাসান

বাংলাদেশ থেকে পুরুষ কর্মী পাঠানো কমেছে। কিন্তু নারী জনশক্তি রপ্তানি বেড়েই চলেছে। ২০১৩ সালে ৫৬ হাজার ৪০০ নারী কর্মী বিদেশে গেছেন, যা আগের বছরের তুলনায় প্রায় ১৯ হাজার বেশি। গত ৪৩ বছরের মধ্যে এই প্রথম এত বেশি নারী বিদেশে গেলেন।
প্রচলিত বাজারগুলোর পাশাপাশি গত বছর নারীদের জন্য নতুন শ্রমবাজার হয়ে ওঠে কাতার। এ ছাড়া হংকংয়ে কর্মী পাঠানো শুরু হয়েছে। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে পৌনে তিন লাখ নারী শ্রমিক কাজ করছেন সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, লেবানন, জর্ডান, কাতার, কুয়েত, মরিশাস, সিঙ্গাপুরসহ বিভিন্ন দেশে।
জনশক্তি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলো বলেছে, নারী শ্রমিকদের বিদেশে যাওয়া ইতিবাচক। তবে তাঁদের অনেকেই নির্যাতন ও হয়রানির মুখে পড়ছেন। নারী অভিবাসন সংগঠনগুলো তাই সচেতন হয়ে ও যথাযথ প্রশিক্ষণ নিয়ে নারীদের বিদেশে যাওয়ার কথা বলছে।
গত বছর প্রথম নারীদের বিদেশে পাঠাতে নিবন্ধন করে সরকার। বিএমইটির তথ্য অনুযায়ী, গত বছর সবচেয়ে বেশি নারী কর্মী গেছেন জর্ডানে। এ সংখ্যা ২১ হাজার ২৪৩ জন। এ ছাড়া আরব আমিরাতে ১৩ হাজার ৭১০, লেবাননে ১০ হাজার ৭৫০, ওমানে ছয় হাজার ৬৮, মরিশাসে এক হাজার ৫৫৭, সৌদি আরবে ১৬৭, বাহরাইনে ১৪১, সিঙ্গাপুরে ১৩৩, ইতালিতে ২৮, মালয়েশিয়ায় ২৩ ও সাইপ্রাসে ১২ জন নারী কর্মী গেছেন।
২০১৩ সালে নারীদের জন্য নতুন বাজার সৃষ্টি হয় কাতারে। ওই দেশে গেছেন দুই হাজার ১০০ নারী। এ ছাড়া গত বছর হংকংয়ে ৩২৩ নারী কর্মী গেছেন। তবে হংকংয়ে যাওয়া কিছু কর্মী দেশে ফিরতে বাধ্য হয়েছেন।
বিএমইটির তথ্য অনুযায়ী, ১৯৯১ থেকে ২০১৩ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত দুই লাখ ৭৬ হাজার ২৬২ জন নারী কর্মী বিদেশে গেছেন। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি গেছেন লেবাননে, ৭৯ হাজার ৩৪৩ জন।
বিএমইটির মহাপরিচালক বেগম শামছুন নাহার বলেন, ‘বিশ্বে অভিবাসী শ্রমিকদের ৪৯ ভাগই নারী। এত দিন বাংলাদেশে অভিবাসী শ্রমিকদের মাত্র ১ শতাংশ ছিল নারী। ২০১২ সালে তা বেড়ে হয়েছে ৬ শতাংশ ছিল, গত বছর তা ১৩ শতাংশে উন্নীত হয়েছে।’
শামছুন নাহার জানান, ‘সরকারিভাবে বিদেশে যাওয়ার জন্য প্রথমবারের মতো গত বছর নারী কর্মীদের নিবন্ধন করে সরকার। সারা দেশে ৪০ হাজার ৪২১ জন নারী কর্মী এতে নিবন্ধন করেন। বর্তমানে এ নিবন্ধন থেকেই বিদেশে যাচ্ছেন নারীরা।’
প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলেছেন, নারী কর্মীদের খোঁজখবর নিয়ে বিদেশে যাওয়া উচিত। নারী কর্মীদের বিদেশে চাকরিসংক্রান্ত যাবতীয় বিষয়ে তথ্য দেওয়ার জন্য বিএমইটি ও ইউএন উইমেনের যৌথ উদ্যোগে বিএমইটি ভবনে ‘নারী অভিবাসী তথ্যকেন্দ্র’ স্থাপন করা হয়েছে। এ কেন্দ্রের কর্মকর্তারা বলেন, রিক্রুটিং এজেন্সির খোঁজ, ভিসা পরীক্ষা এবং অন্য যেকোনো তথ্যের জন্য নারী কর্মীরা এখানে যোগাযোগ করতে পারেন।
বাংলাদেশ মহিলা অভিবাসী শ্রমিক অ্যাসোসিয়েশনের (বমসা) পরিচালক সুমাইয়া ইসলাম বলেন, বর্তমানে পৌনে তিন লাখ নারী কর্মী বিদেশে আছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published.