৩২তম বিশেষ বিসিএস

Spread the love

উত্তীর্ণদের চেয়ে শূন্য পদ বেশি, তবু তাঁরা নিয়োগ পাচ্ছেন না

শরিফুল হাসান


পদ শূন্য থাকার পরও ৩২তম (বিশেষ) বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ কয়েক শ প্রার্থী নিয়োগ পাচ্ছেন না। সরকারি কর্মকমিশন (পিএসসি) বলছে, ৩৩তম বিসিএসের সঙ্গে যোগ করে শূন্য ওই পদগুলোতে প্রার্থী নিয়োগের চিন্তা চলছে।তবে উত্তীর্ণ প্রার্থীরা বলছেন, শূন্য পদ থাকার পরও চূড়ান্তভাবে উত্তীর্ণদের নিয়োগ না দেওয়াটা অবিচার। মুক্তিযোদ্ধা, নারী ও উপজাতীয় কোটায় প্রার্থী নিয়োগের জন্য ২০১১ সালের শেষে ৩২তম বিশেষ বিসিএসের প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। এই বিসিএসে কারিগরি ও পেশাগত বিভিন্ন ক্যাডারের মধ্যে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় দুই হাজার ২০২টি, নারী কোটায় ২১১টি এবং উপজাতীয় কোটায় ৩৯২টি পদ শূন্য ছিল।২৬ হাজার ৪৩৭ জন প্রার্থী এই পরীক্ষায় আবেদন করেন। প্রিলিমিনারি ও লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর দুই হাজার ৭৮৮ জনকে মৌখিক পরীক্ষার জন্য ডাকা হয়। এ বছরের ১০ জানুয়ারি ওই পরীক্ষার চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করা হয়। এতে দুই হাজার ৫৯২ জন উত্তীর্ণ হন। এর মধ্যে এক হাজার ৬৮০ জনকে বিভিন্ন ক্যাডারে সুপারিশ করা হয়। অর্থাৎ উত্তীর্ণ প্রার্থীদের মধ্যে ৯১২ জনকেই নিয়োগের সুপারিশ করতে পারেনি পিএসসি।এদিকে ৩২তম বিশেষ বিসিএসে শূন্য পদ ছিল দুই হাজার ৮০৫টি। এক হাজার ৬৮০ জনকে নিয়োগের সুপারিশ করায় এক হাজার ১২৫টি পদ শূন্য রয়েছে। এদিকে ২০১০ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি সরকারি এক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, মুক্তিযোদ্ধা, নারী ও উপজাতীয় কোটাগুলোয় প্রার্থী না পাওয়া গেলেও ওই পদগুলো শূন্য রাখতে হবে। এই পরিপ্রেক্ষিতে সম্প্রতি পিএসসি থেকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে একটি চিঠি দেওয়া হয়েছে।ওই চিঠিতে বলা হয়, প্রার্থী না থাকায় মুক্তিযোদ্ধা, নারী ও উপজাতীয় কোটায় এক হাজার ১২৫টি পদ পূরণ করা যায়নি। ভবিষ্যতে ৩২তম বিসিএসের মতো কোনো বিশেষ বিসিএস নেওয়া সম্ভব হবে না। কাজেই এই পদগুলো শূন্য না রেখে ৩৩তম বিসিএসের কারিগরি পদের সঙ্গে সমন্বয় করে নিয়োগ দেওয়া যেতে পারে।৩২তম বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন কিন্তু ক্যাডারে সুপারিশ করা যায়নি এমন কয়েকজন প্রার্থী পিএসসির এই সিদ্ধান্তে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তাঁরা বলেন, এক হাজার ১২৫টি পদ শূন্য এবং উত্তীর্ণ প্রার্থীও আছেন, তাই চাইলে পিএসসি উত্তীর্ণদের মধ্য থেকে শূন্য পদগুলোতে নিয়োগ দিতে পারে।শিক্ষা ক্যাডারে উত্তীর্ণ কয়েকজন নারী প্রার্থী বলেন, দুই হাজার ৮০৫টি পদের মধ্যে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় পদ ছিল দুই হাজার ২০২টি। কিন্তু নারী কোটা ছিল মাত্র ২১১টি। ফলে অনেক নারী প্রার্থী নিয়োগ পাননি। তাঁদের শূন্য পদগুলোতে নিয়োগ দেওয়া যেতে পারে।এ বিষয়ে জানতে চাইলে পিএসসির পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (ক্যাডার) আ ই ম নেছারউদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘কোটা জটিলতার কারণে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় পদ শূন্য থাকলেও নারী প্রার্থীদের সেখানে নিয়োগ দেওয়া যায় না। আবার এটিও সত্য, কারিগরি ক্যাডারগুলোতে অধিকাংশ সময় কোটার ক্ষেত্রে শূন্য পদের চেয়ে উত্তীর্ণ প্রার্থী কম থাকে। আবার কোটার পদগুলো সংরক্ষণের নিয়ম থাকায় বছরের পর বছর এই পদগুলো শূন্য থাকে। এ কারণেই ৩৩তম বিসিএসের সঙ্গে ৩২তম বিসিএসের শূন্য এক হাজার ১২৫টি পদ সমন্বয়ের সুপারিশ করা হয়েছে। তবে অন্য কোনোভাবে উত্তীর্ণদের নিয়োগ দেওয়া যায় কি না, সেটি আমরা বিবেচনা করব।’

Leave a Reply

Your email address will not be published.