বিদেশে বাংলাদেশ দূতাবাসের শ্রম শাখায় জনবল বাড়ানোর উদ্যোগ

Spread the love

শরিফুল হাসান

বিদেশে বাংলাদেশের দূতাবাসগুলোতে জনবল বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। জনবল সংকটের কারণে প্রবাসীদের প্রয়োজনীয় সেবা দেওয়া সম্ভব না হওয়ায় এই উদ্যোগের কারণ। বৈদেশেকি কর্মসংস্থান ও প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় সূত্রে এ খবর জানা গেছে। সূত্র জানায়, ইতিমধ্যে সব আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে বিভিন্ন দূতাবাসের শ্রম শাখায় ২৫টি পদ সৃষ্টি করা হয়েছে। এ ছাড়া কয়েকটি দূতাবাসে নতুন শ্রম শাখা খোলাসহ রাজস্ব খাতে মোট ১৪২টি পদ সৃষ্টির একটি প্রস্তাব অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন পেলেই এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। জানতে চাইলে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিদেশে শ্রমিকদের সেবা দেওয়ার কাজটি মূলত শ্রম শাখা থেকেই করা হয়। কিন্তু ১০ হাজার লোকের সেবার জন্য আমাদের মাত্র একজন কর্মী আছেন। এটা দিয়ে কি সেবা দেওয়া সম্ভব? সৌদি আরবেই আমাদের ২০-২২ লাখ লোক আছে। ওমানে আছে দুই থেকে তিন লাখ লোক। কাজেই ন্যূনতম সেবা দিতে হলেও আমাদের বর্তমানের চেয়ে পাঁচ-সাত গুণ বেশি জনবল দরকার। তাই আমরা জনবল বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছি।’মন্ত্রী বলেন, অর্থ মন্ত্রণালয়ে যে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, তা ন্যূনতম চাহিদা। বাস্তবে আরও বেশি জনবল বাড়ানো দরকার। জন প্রশাসন মন্ত্রণালয় ২০০৯ সালের ২ ডিসেম্বর বিভিন্ন দূতাবাসের শ্রম শাখায় মোট ৫৪টি পদ সৃজনের অনুমতি দেয়। অর্থ মন্ত্রণালয় ২০১০ সালের ৭ জুন ছয়টি এবং পরবর্তী সময়ে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অনুরোধে গত বছরের ২১ সেপ্টেম্বর আরও ১৯টি পদের অনুমোদন দেয়। এ ছাড়া অস্থায়ী ভিত্তিতে কল্যাণ তহবিলের আওতায় ১২টি মিশনে ৫৬টি পদসহ মোট ১৭টি মিশনে কল্যাণ কর্মকর্তা, অনুবাদক, আইন সহকারী, কল্যাণ সহকারী ইত্যাদির ৬৪টি পদ সৃষ্টি করা হয়েছে। এই পদগুলোও রাজস্ব খাতে স্থায়ীভাবে সৃজন করার প্রস্তাব দিয়েছে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, কয়েক বছর ধরে বিদেশ থেকে বছরে ৭০ হাজার কোটি টাকারও বেশি বৈদেশিক মুদ্রা আসছে। আর শ্রম শাখাগুলোর জন্য বছরে ব্যয় হচ্ছে এখন ২৪ কোটি টাকার মতো। নতুন পদ সৃষ্টি হলে তা ৪০ কোটিতে উন্নীত হবে। বর্তমানে ১৪৩টি দেশে ৭৬ লাখ বাংলাদেশি কর্মরত। সবচেয়ে বেশি রয়েছেন মধ্যপ্রাচ্যে। এ ছাড়া দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, উত্তর আফ্রিকা, অস্ট্রেলিয়া, ইউরোপ, যুক্তরাষ্ট্র এবং কানাডাতেও উল্লেখযোগ্যসংখ্যক বাংলাদেশি কর্মরত আছেন।তাঁদের জন্য আইনগত সহায়তাসহ বিভিন্ন কল্যাণমূলক কাজ, বাজার অনুসন্ধান, নতুন কর্মী নিয়োগ প্রভৃতি দূতাবাসের শ্রম শাখার মাধ্যমে হয়ে থাকে। যেসব দেশের দূতাবাসে শ্রম শাখা নেই, সেখানে কনস্যুলার শাখা থেকে এসব সেবা দেওয়া হয়। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই দূতাবাসের জনবল ও সম্পদের সীমাবদ্ধতার কারণে প্রবাসীরা প্রার্থিত সেবা পান না। বর্তমানে বিভিন্ন দেশে নারী গৃহকর্মী নিয়োগ বেড়েছে। পুরুষ কর্মীদের তুলনায় নারীদের ক্ষেত্রে নিয়োগকর্তার সঙ্গে অনেক বেশি যোগাযোগ করতে হয়। এ কারণেও শ্রম শাখায় জনবল বাড়ানো দরকার। এ ছাড়া দূতাবাসগুলোতে শ্রম শাখা খোলা হলে সেখানে বসবাসরত বাংলাদেশিদের সেবা প্রদান, বৈধ অভিবাসনের সুযোগ সম্প্রসারণ এবং অভিবাসন বিষয়ে দুই দেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক উন্নয়নে সহায়ক হবে।যে দেশে ন্যূনতম ১০ হাজার বাংলাদেশি আছেন, সে দেশের দূতাবাসে একটি করে শ্রম শাখা খুলতে চায় মন্ত্রণালয়। এই হিসাবে দক্ষিণ কোরিয়ার দূতাবাসে শ্রম শাখা খোলা হয়েছে। সেখানে ১২ হাজার বাংলাদেশি কর্মরত আছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published.