24/8/20
ফটো সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজলের অপরাধটা কী আমাকে কেউ বলবেন? সে কী চুরি করেছে? ডাকাতি? দুর্নীতি? রাষ্ট্রের সম্পদ লুট? বিদেশে টাকা পাচার? ফৌজদারি কোন অপরাধ? তা না হলে কেন গত সাড়ে তিন মাস ধরে জেলে তিনি? অনেক বড় অপরাধী বুঝি তিনি যে জামিনও দেয়া যাচ্ছে না?
বিশ্বাস করেন, মাঝে মধ্যে ভীষণ অসহায় লাগে। কাজলের ছেলেটার কথা ভাবলে খুব কষ্ট লাগে। কাজলের ছেলে পলক বলছে, দুই সপ্তাহ আগে সর্বশেষ বাবার সঙ্গে তার কথা হয়েছে। বাবা জানিয়েছেন যে, তার শারীরিক অবস্থা বর্তমানে খুবই খারাপ। বাম হাত প্যারালাইজড হয়ে আছে। বাম হাত দিয়ে কোনো কাজ করতে পারছেন না। ঘনঘন বমি হচ্ছে। বমির সঙ্গে রক্ত যাচ্ছে।
এরপর পরিবারের পক্ষ থেকে তার আইনজীবীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয় এবং তার চিকিৎসার জন্য আদালতে আবেদন করা হয়। তাদের আবেদনে সাড়া দিয়ে আদালত কাজলের সঠিক চিকিৎসার যথার্থ ব্যবস্থা নিতে কারাগার কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন। আদালতের নির্দেশের পরেও তাহলে কেন তিনি কারাগারে? উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে কোনো হাসপাতালে ভর্তি করানো হচ্ছে না?
আচ্ছা ১০ মার্চ কারা কাজলকে ধরে নিয়ে গিয়েছিল? যশোরের বেনাপোল সীমান্তে কারা তাকে ফেলে গিয়েছিল? পাসপোর্ট আইনে অবৈধ অনুপ্রবেশের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হলেও, পরে তাঁকে কেন ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানে হলো?
ভীষণ আফসোস লাগে। এই দেশের কোটি কোটি টাকা লুট করা লোকজন আসামি হয়েও হাসপাতালে আরাম করবে, স্বাধীনতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধীরাও হাসপাতালে থাকবে কিন্তু কাজলকে জেলে থাকতে হবে। কিন্তু কেন? জামিন দিলে সে পালিয়ে যাবে? আমি সাংবাদিক কাজলকে ব্যক্তিগতভাবে চিনি না। তাঁর ছেলেটার ছোটাছুটি দেখে ভীষণ মায়া লাগছে। বিশ্বাস করেন কাজল পালিয়ে যাবে না। প্লিজ আপনারা একটু দয়া করুন।
পুলিশ বলছে, কাজলের বিরুদ্ধে সাংসদ সাইফুজ্জামান শিখরসহ যুব মহিলা লীগের দুই নেত্রী ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেছেন। মামলার বাদী মাননীয় সাংসদ এবং দুই যুবলীগ নেত্রীর কাছে অনুরোধ করছি, আপনারা একটু দয়া করেন। একটা লোককে তো অনেক সাজা দিয়েছেন। এবার দয়া করে আপনারা মামলাগুলো প্রত্যাহার করুন। আপনারা চাইলে জামিন হবে।
বিশ্বাস করেন কাজলের শিক্ষা হয়েছে। তিনি আর কোনদিন আপনাদের বিরুদ্ধে কথা বলবেন না। কোথাও লিখবেন না। আপনারা অনেক ক্ষমতাবান। প্লিজ এবার একটু রেহাই দিন। প্লিজ।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ফটো সাংবাদিক কাজল আপনার অনেক ঐতিহাসিক ছবি তুলেছেন। ছাত্রলীগের অনেক আন্দোলন সংগ্রামের ছবি তিনি তুলেছেন। আপনাকেও অনুরোধ করছি, প্লিজ কাজলকে মুক্ত করার ব্যবস্থা করুন। কাজলের ছেলেটার আকুতি শুনুনু। একটা পরিবারের আকুতি শুনুন। প্লিজ।

