দীপক কামাল স্যারকে মনে পড়ে

Spread the love

6/8/20

১১ বছর আগে আজকের দিনে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম একজন শিক্ষককে নিয়ে। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছেলেমেয়েরা নিশ্চয়ই মনে রেখেছে তাদের শিক্ষক অধ্যাপক দীপক কামাল স্যারকে।‌ খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিশারিজ অ্যান্ড মেরিন টেকনোলজি বিভাগের অধ্যাপক ছিলেন কামাল স্যার।অসম্ভব দেশ‌প্রে‌মিক একজন মানুষ। অসম্ভব সুন্দর সব স্বপ্ন দেখতেন এই বাংলাদেশ নিয়ে।

স্যার মারা যাওয়ার খবর শুনে স্যারকে নিয়ে একটা লেখা লিখেছিলাম। একটা মানুষ কতোটা ভালো হতে পারে সেটা স্যারকে যারা চেনেন তারা নিশ্চয়ই জানেন। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের অত্যন্ত জনপ্রিয় শিক্ষক ছিলেন তিনি। শিক্ষকতার পাশাপাশি তিনি খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় স্টাডিজের নির্বাহী সম্পাদক ছিলেন। দায়িত্ব পালন করেছেন খান জাহান আলী হলের প্রভোষ্টের।

ছাত্র-ছাত্রীদের সঙ্গে তাঁর খুবই ভালো সম্পর্ক ছিল। আর দশজন শিক্ষকের চেয়ে একটু বেশি বন্ধুভাবাপন্ন ছিলেন তিনি তাঁর ছাত্রদের প্রতি। তিনি খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় রক্তদাতা ইউনিট বাঁধনেরও উপদেষ্টা ছিলেন।

যারা জানেন না তাদের জানাই, দীপক কামালের জন্ম ১৯৬৫ সালের ৩০ জানুয়ারি পাবনায়। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব মেরিন সাইন্স থেকে ১৯৮৯ সালে অনার্স ও ১৯৯১ সালে মাষ্টার্স করেন। পরের বছর ১৯৯২ সালে তিনি খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিশারিজ বিভাগে প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন। ২০০৬ সালের ৩০ জানুয়ারি অধ্যাপক হন।

দীপক কামাল স্যার গবেষনা করতেন মেরিন সাইন্স নিয়ে। সুন্দরবন,ম্যনেগ্রোভ, বাংলাদেশের মাছ এসব নিয়ে তাঁর অনেক গবেষনা আছে। সর্বশেষ তিনি কাঁকড়ার সম্ভবনা নিয়ে গবেষনা করছিলেন।

থাইল্যান্ডের এশিয়ান ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজিতে (এআইটি) পিএইচডি করা অবস্থায় হঠাৎ স্ট্রোক করে তিনি মারা যান। তাঁর মৃতুর খবর দেশে এসে পৌছালে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় শোকের ছায়া নেমে আসে।

ব্যক্তিগতভাবে আমি অধ্যাপক দীপক কামালকে চিনতাম না। কিন্তু তাঁর কাজ সম্পর্কে জানতাম। মৃত্যুর পর তাকে নিয়ে লেখাটার সূত্র ধরে আমি চিনতে পারি স্যারের স্ত্রী হেনা আপা আর স্যারের সেই সময়ের ছোট্ট ছেলে রাতুলকে যে এখন আমার ভাগ্নে। রাতুল বুয়েটের শেষবর্ষে। দারুণ ছেলে। হেনা আপা ডাক্তার। হেনা আপা, রাতুল, দীপক কামাল স্যার ওরা সবাই দেশকে এতো ভালোবাসে। এই একটা জায়গার কারণেই ওরা আমার রক্তের চেয়েও বড় আত্মীয়।

অসম্ভব দেশ প্রেমিক, একজন ভালো মানুষ দীপক কামাল বারবার বলতেন, চলুন সবাই মিলে একটি ভালো দেশ গড়ি। নানা সমস্যার মধ্যে হয়তো একদিন আমরা সেই দেশ গড়বোও। সেদিন কি আমরা মনে রাখবো এই মানুষটিকে। নিশ্চয়ই মনে রাখবো। মনে রাখবে, তাঁর ছাত্ররা, তাঁরে ছেলে মনে রাখকব এই বাংলার মাটি, এই বাংলার সবুজ শ্যামল। মনে রাখবে সুন্দরবন। পরপারে নিশ্চয়ই ভালো আছেন স্যার।

Leave a Reply

Your email address will not be published.