শরিফুল হাসান
একটা নিউজ হয়ে যেতে পারে ইতিহাস। ফেসবুক মনে করিয়ে দিচ্ছে সেই স্মৃতি। বিসিএসে কোটা ব্যবস্থা বাতিলের খবর এখন সবাই জানেন। ২০১৮ সালের ৩ অক্টোবর মন্ত্রিসভায় কোটা ব্যবস্থা বাতিল করা হয়। কিন্তু কোটা ব্যবস্থার সংকট নিয়ে প্রথম পরিপূর্ণ নিউজটা করেছিলাম নয় বছর আগে ২০১৩ সালের ১৩ জুলাই। সেদিন প্রথম আলোর লিডনিউজ ছিলো এটি।
খবরটি পড়ে দেখতে পারেন। এর আগে ৩৪ তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি থেকে কোটা পদ্ধতি প্রয়োগের খবরটি অনুসন্ধান করে প্রথম ব্রেকিং নিউজ হিসেবে প্রকাশ করেছিলাম। আমার সেই নিউজ পড়ে শুরু হলো প্রিলিমিনারির ফল বাতিলের আন্দোলন। প্রথমে অস্বীকার করলেও পরপর দুটি নিউজ বিশেষ করে এই নিউজটার পরেরদিনই পিএসসি ৩৪ তম বিসিএসের প্রিলির ফলাফল বাতিল করতে বাধ্য সয়।
এরপর নতুন করে ফল প্রকাশ করা হয়। সত্যিকারের সাংবাদিকতার শক্তি এটাই। প্রিলিমিনারিতে কোটার সেই খবর প্রকাশের পর কোটা নিয়ে বিস্তারিত জানা বোঝার চেষ্টা করি। অতীতের সব বিসিএসের তথ্য ও নানা ধরনের গবেষণা প্রতিবেদনে ঘেঁটে সবার সাথে কথা বলে ২০১৩ সালের ১৩ জুলাই প্রকাশ করলাম এই নিউজ যারা শিরোনাম মেধা নয় কোটার প্রাধান্য।সেদিন আমার লিড নিউজটা পড়ে মুক্তিযোদ্ধা নাসিরউদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু লিখেছিলেন, কোন কোটার জন্য আমরা যুদ্ধ করিনি।
বরং সব মানুষের সমান অধিকারের জন্য যুদ্ধ করেছিলাম। কাজেই কোটা প্রথার সংস্কার হোক। তবে স্বাধীনতাবিরোধীদের তিনি সরকারি চাকুরিতে নিষিদ্ধের দাবি করেছিলেন। আমি তাঁর সাথে একমত। বাচ্চু ভাইয়ের কথাগুলো আমাকে সেদিন ভীষণ আলোড়িত করেছিল।আমি মনে করি এই বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় অর্জন মুক্তিযুদ্ধ যার কারণে আমরা পেয়েছি স্বাধীন বাংলাদেশ।
কাজেই এই দেশের প্রত্যেক মুক্তিযোদ্ধা, প্রত্যেক শহীদের তালিকা থাকা উচিত। তাদের বিস্তারিত আমাদের তরুণ প্রজন্মকে জানানো উচিত। এই পরিবারগুলোর পাশেও রাষ্ট্রের থাকা উচিত। কিন্তুতাদের নাতি পুতিদের জন্য কোটার প্রয়োজন নেই । আমি কোটা প্রথা বাতিল নয় সংস্কারের পক্ষে।
আমি এখনো মনে শহীদ মুক্তিযোদ্ধার সন্তান, আদিবাসী এবং নারীদের মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের জন্যসহ সব মিলিয়ে ২০ ভাগ কোটা থাকতেই পারে। তবে স্বাধীনতা বিরোধীদের সরকারি চাকরিতে নিষিদ্ধ করা উচিত। এ ছাড়া বিসিএসের পরীক্ষা পদ্ধতির সংস্কার প্রয়োজন।