শরিফুল হাসান

পুরোনো একটি গির্জা, যার চূড়ায় একটি ঘড়ি বসানো। দুই পাশে বেশ বড় গাছপালা। পুরান ঢাকার এমন একটি ছবি যে কাউকে মুগ্ধ করবে। ১৮৭২ সালে তোলা এই ছবি পাওয়া গেল ব্রিটিশ লাইব্রেরির ওয়েবসাইটে। তাতে বলা হয়েছে, নাম না-জানা এক আলোকচিত্রী ঢাকার সেন্ট থমাস চার্চের এই ছবি তুলেছিলেন। ১৯০৪ সালে ফ্রিৎজ ক্যাপও এই গির্জার ছবি তুলেছিলেন। বাহাদুর শাহ পার্কের উত্তরে শাঁখারীবাজারের পূর্ব পাশে জনসন রোডে অবস্থিত এই গির্জা ঢাকার আদি গির্জাগুলোর একটি। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির আমলে বেশ কয়েকজন ইংরেজ কর্মচারী-কর্মকর্তা এ অঞ্চলে বসবাস করতে শুরু করেন। তাঁদের প্রার্থনার জন্য গির্জাটি নির্মাণ করা হয়। সন্ত থমাস যিনি ভারতীয় উপমহাদেশে খ্রিষ্টধর্ম প্রচার করেছিলেন। তাঁর নাম অনুসারেই গির্জাটির নামকরণ করা হয় ‘সেন্ট থমাস চার্চ’। ১৮৬৩ সালে গির্জাটির চূড়ায় একটি ঘড়ি স্থাপন করা হয়। বিশ্বখ্যাত ঘড়ি প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান বিগবেন এটি নির্মাণ করেছিল বলে জানা যায়। একসময় পুরান ঢাকাবাসী এ বিশাল ঘড়িতেই সময় দেখত। ইতিহাসবিদ মুনতাসীর মামুনের ঢাকা: স্মৃতি বিস্মৃতির নগরী বইটিতে বলা হয়েছে, ১৮১৯ সালে ঢাকা জেলের কয়েদিদের শ্রমে নির্মিত হয়েছিল এই গির্জা। ভারত উপমহাদেশের অন্যান্য অঞ্চলে উনিশ শতকে যে স্থাপত্যের অনুকরণে অ্যাংলিকান গির্জাসমূহ নির্মিত হয়েছিল তার সঙ্গে এই গির্জার তেমন কোনো পার্থক্য নেই। এই গির্জার প্রধান আকর্ষণ এর চূড়ার ঘড়িটি থাকলেও এখন আর সেটি সচল নয়। তবে দুই শ বছর হয়ে গেলেও গির্জার আসবাবগুলো এখনো অটুট ও মজবুত।
কেউ পুরান ঢাকায় গেলে গির্জাটি ঘুরে আসতে পারবেন। এর শান্ত পরিবেশ মুগ্ধ করবে যে কাউকে।



