নবাবদের জলসাঘর এখন মধুর ক্যানটিন

Spread the love

শরিফুল হাসান

একতলা একটি বাড়ি। দুপাশে সবুজ গাছপালা, সামনে বাগান। মূল বাড়িটির চেয়েও এর পাশের গোলাকৃতির ঘরটি এর বিশেষ নকশার জন্য যে কারও নজর কাড়বে। ১৯০৪ সালে তোলা এই ছবিটির আলোকচিত্রী ফ্রিৎজ কাপ। তিনি সেই সময়ের ঢাকার অনেক ছবি তুলেছিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়া-আসা করেছেন, এমন যে-কেউ গোলঘরটি দেখে বুঝতে পারবেন, এটিই বিখ্যাত মধুর ক্যানটিন। বাংলাপিডিয়ায় বলা হয়েছে, বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবন এলাকায় ‘মধুর ক্যানন্টিন’ নামে পরিচিত ভবনটি ছিল ঢাকার নবাবদের জলসাঘর। ভবনটির মেঝে ও চতুর্দিকের প্রশস্ত অঙ্গন ছিল মার্বেল পাথরে বাঁধানো। এখানে নবাব পরিবারের লোকেরা স্কেটিং অনুশীলন করতেন বলে ভবনটিকে ‘স্কেটিং প্যাভিলিয়ন’ও বলা হতো। এই ভবনটির দুটি গোলাকার কক্ষ আজও টিকে আছে। মুনতাসীর মামুনের ঢাকা: স্মৃতি বিস্মৃতির নগরীর দ্বিতীয় খণ্ডে ছবির পরিচয়ে বলা হয়েছে শাহবাগে ঢাকার নবাবদের দরবার হল এটি। ধারণা করা হয়, ১৮৭৩ সালে এর নির্মাণকাজ শুরু হয়। যাঁর নামে এই ক্যানটিন, তাঁর পুরো নাম মধুসূদন দে। ১৯২১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার সঙ্গে সঙ্গেই কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে মধুসূদন দে তাঁর বাবা আদিত্য দের সঙ্গে তৎকালীন কলাভবনে কিছু খাবার বিক্রি শুরু করেন। তাঁর ক্যানটিনটি স্থায়ী হয় এই দরবার হল বা জলসাঘরে। ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে বাংলাদেশের সব জাতীয় আন্দোলনের চালিকাশক্তি ছিল এই মধুর ক্যানটিন। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে মধুসূদন দে নিহত হন পাকিস্তানি সেনাদের হাতে। বর্তমানে মধুসূদন দের ছেলে অরুণ দে ক্যানটিনটি চালাচ্ছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published.